1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইউরো এলাকার সংকটের সমাধান খুঁজছে বিশ্ব

২০ জুন ২০১২

গ্রিসের আগামী সরকার ইউরো এলাকাকে বিপন্ন করবে না, এমনটা ধরে নিয়ে গোটা বিশ্বে স্বস্তির নিঃশ্বাস পড়ছে৷ কিন্তু স্পেন ও ইটালির পরিস্থিতি নিয়ে দুশ্চিন্তা দূর হচ্ছে না৷ জি-টোয়েন্টি নেতারা ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করছেন৷

https://p.dw.com/p/15Hvf
ছবি: AP

চলতি সপ্তাহে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা পুঁজিবাজারের উপর প্রভাব ফেলছে৷ এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবশ্যই গ্রিসের নির্বাচনের ফলাফল৷ তবে স্পেন ও ইটালির সংকটের কারণে সামগ্রিকভাবে বাজার এখনো তেমন শান্ত হতে পারছে না৷ সোমবার বন্ড বাজারে এই দুই দেশেরই সুদের হার অস্বাভাবিক মাত্রায় বেড়ে গিয়েছিল৷ অর্থাৎ বাজার থেকে ঋণ নিতে এই দুই দেশকে চড়া সুদ দিতে হচ্ছে৷

বাজারে স্বস্তির নিঃশ্বাস পড়েছে, কারণ গ্রিসের নতুন জোট সরকার ঋণ শোধ করবে এবং সংস্কার চালিয়ে যাবে – এমনটাই ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ এরই মধ্যে ঋণের খোলা বাজারে গ্রিসের জন্য চড়া সুদের হার কিছুটা কমে গেছে৷ গ্রিস আপাতত স্থিতিশীল হলে ইউরো এলাকা ছেড়ে সে দেশের প্রস্থানের আশঙ্কা এবং তার পরিণতি নিয়ে আর ভাবতে হবে না৷ তখন ইউরোজোনের অন্যান্য সমস্যার প্রতি মন দেওয়া যাবে৷ নির্বাচনের আগে কড়া সুরের পর গ্রিস'কে এখন কিছুটা ছাড় দেওয়ার কথাও হচ্ছে৷ তা বলে নিয়ম শিথিল করা হবে না৷ শুধু সংস্কার কার্যকর করার সময়সীমা কিছুটা বাড়ানো যেতে পারে৷

Griechenland ATEBank
ছবি: dapd

জি-টোয়েন্টি গোষ্ঠীর যে সব দেশে ইউরো চালু আছে, সে সব দেশের নেতারা বলেছেন, ইউরো এলাকার স্থিতিশীলতা রক্ষায় তাঁরা সব প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত৷ বাকিরাও সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন৷ মেক্সিকো সম্মেলনে অবশ্য একটি বিষয় নিয়ে ইউরোজোন বনাম বাকিদের সংঘাত দেখা গেছে৷ অনেকের অভিযোগ, ইউরোপ শুধু বাজেট ঘাটতি নিয়ন্ত্রণ ও সংস্কার নিয়ে ব্যস্ত – অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে যথেষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না৷ জার্মান চ্যান্সেলর ম্যার্কেল ও ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট জোসে মানুয়েল বারোসো কড়া ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, এটাই সঠিক পথ৷ বাইরে থেকে এ নিয়ে কোনো হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করা হবে না৷ বারোসো বলেন, ‘‘জি-টোয়েন্টির কিছু দেশের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের তফাত হলো, ইইউ'র দেশগুলি গণতান্ত্রিক৷ আমরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সিদ্ধান্ত নিই৷ কখনো একটু বেশি সময় লাগে বটে৷ ২৭টি গণতান্ত্রিক দেশের জোট বলে কথা! সত্যি কথা বলতে কি আমরা এখানে গণতন্ত্র বা অর্থনীতির পাঠ নিতে আসি নি৷''

বারোসো এই প্রসঙ্গে মনে করিয়ে দেন যে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফ'এর সর্বোচ্চ অর্থদাতাই হলো ইউরোপ৷ তাঁর মতে, প্রয়োজন পড়লে আইএমএফ'এর যে কোনো সদস্য দেশেরই সহায়তা পাওয়ার কথা৷ তারা যদি ইউরোপীয় ধনী দেশ হিসেবে পরিচিত হয়, সেক্ষেত্রেও কোনো ব্যতিক্রম হতে পারে না৷ তাছাড়া সংকটের উৎস উত্তর অ্যামেরিকা, বলেন বারোসো৷ সেখানকার আর্থিক বাজারের সংকটই ইউরোপকে সংক্রমিত করেছে৷ জার্মান চ্যান্সেলর ম্যার্কেল অবশ্য আলোচনায় কিছুটা ভারসাম্য আনার চেষ্টা করেছেন৷ তাঁর মতে, বর্তমান পরিস্থিতি সামাল দিতে সব মহাদেশকেই তার দায়িত্ব পালন করতে হবে৷ ইউরোপ সেই কাজ করতে হবে৷

প্রশ্ন উঠছে, গোটা বিশ্ব কি ঐক্যবদ্ধভাবে ইউরোজোন সংকটের মোকাবিলা করতে প্রস্তুত? নীতিগতভাবে সবাই প্রস্তুত, এবিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই৷ কারণ ইউরো এলাকার সংকট আরও বাড়লে গোটা বিশ্ব ক্ষতিগ্রস্ত হবে৷ তবে সংকট মোকাবিলার পথ নিয়ে আগের মতো মতপার্থক্য রয়েই গেছে৷ ব্রিটেন ও অ্যামেরিকা যেমন আর্থিক বাজারের উপর আরও নিয়ন্ত্রণ বা লেনদেনের উপর কর চাপানোর বিরোধিতা করে চলেছে৷ ইউরোপ এক্ষেত্রে ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবছে৷

এসবি / ডিজি (এপি, রয়টার্স, এএফপি)