ইউরো ২০১২
৬ জুন ২০১২ফেডোরোভা স্ট্রিট ব্রিজের কাছেই অনেক দিন কাটাতে হয়েছে ১৩ বছর বয়সি জেনিয়াকে৷ তাকে এখন সেখান থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু কিয়েভ নগরীতে আসন্ন ইউরো আসর ২০১২ নিয়ে সে যেটুকু জানে তা হলো, এর ফলে তার জীবন আরো কঠিন হতে যাচ্ছে৷ জার্মান বার্তা সংস্থা ডিপিএ'র সাথে সাক্ষাৎকারে জেনিয়া বলেছে তার উৎকণ্ঠার কথা৷ পুলিশ এখন খুবই তৎপর ইউরো আসর চলাকালে নগরীর পথ-ঘাট থেকে ছিন্নমূল মানুষ ও পথশিশুদের সরিয়ে ফেলতে৷ যদি তারা জেনিয়ার মতো গৃহহীনদের ধরতে পারে তাহলে একেবারে নগরীর বাইরে চালান করবে৷
কিয়েভের রাজপথে জেনিয়ার মতো ছিন্নমূল কতো মানুষ বাস করে তার হিসাব নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে৷ ইউক্রেন সরকারের হিসাবে সংখ্যাটি প্রায় ১০ হাজার৷ তবে সামাজিক সংগঠনগুলোর হিসাবে, ৩০ লাখ মানুষের কিয়েভ নগরীতে ছিন্নমূল মানুষ রয়েছে প্রায় পঞ্চাশ হাজার৷ এদের অধিকাংশই নগরীর পরিত্যক্ত ভবন, সড়ক ও ব্রিজের পাশে কিংবা সোভিয়েত আমলের পরিত্যক্ত শিল্প-কারখানার ভবন ও চত্বরে কোনরকমে বাস করে৷
কিন্তু ইউরো আসর উপলক্ষ্যে নগরীতে আগত পর্যটক ও অতিথিদের জন্য ঘষে মেজে ঝকঝকে করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে৷ একইসাথে পুলিশের নথিতে থাকা ছিন্নমূল মানুষগুলোকে হয় স্বজনদের কাছে ফেরত পাঠানো অথবা কোন এতিমখানায় পাঠানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে স্থানীয় সমাজ কর্মীরা জানিয়েছেন৷ কিন্তু সেখানে আবার এমন অনেক মানুষ রয়েছে, সরকারের হিসাবে যাদের আদৌ কোন অস্তিত্ব নেই৷
তাদের মধ্যে অনেকে হয়তো পথেই বড় হয়েছে৷ তারা বাস্তবে বিরাজ করলেও সরকারের নথিপত্রে তাদের কোন হিসাব নেই৷ তাদের কখনও জন্মনিবন্ধন করা হয়নি৷ তাদের কোন ঠিকানা নেই৷ এমনকি তাদের অনেকে জানেও না যে, তাদের পিতা-মাতা কারা বা কোথায় থাকে৷ কিয়েভের বাস্তুহারাদের সহায়তায় কর্মরত বেসরকারি সংস্থা ‘ফাদার্স কেয়ার' এর আইনজীবী মারিনা সিনসিঙ্কো বলেন, ‘‘এসব ছিন্নমূল মানুষ হয়তো ইউরো ২০১২ আসর দেখতে আসা অতিথিদের চোখেও পড়বে না৷ আর তাদের কেউ কেউ এসময় নগরীতে থাকলেও হয়তো ভিক্ষা করবে নতুবা কোন অপরাধ কর্ম করবে৷''
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন