রানি এলিজাবেথের জার্মানি সফর
২৫ জুন ২০১৫বুধবার ছিল ৮৯ বছর বয়সি রানি এলিজাবেথ এবং তাঁর ৯৪ বছর বয়সি স্বামী প্রিন্স ফিলিপের সর্বাধুনিক জার্মানি সফরের প্রথম দিন৷ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বার্লিনের টেগেল বিমানবন্দরে রাজকীয় অতিথিদের ২১ বার কামান দেগে অভ্যর্থনা জানানো হয়৷ অতঃপর তাঁদের ব্রান্ডেনবুর্গ তোরণের ঠিক সামনে অবস্থিত ঐতিহ্যমণ্ডিত আডলন হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়৷ রানি ও প্রিন্স ফিলিপের জন্য সেখানে রয়াল সুইট-টি রিজার্ভ করা হয়েছে৷
বুধবার রানি প্রথমে বার্লিনের স্প্রে নদীর উপর ‘‘আয়াক্স'' নামধারী একটি খোলা লঞ্চে করে ঘোরেন – ঘণ্টা খানেকের টুর৷ লঞ্চে ছিলেন রানি ও প্রিন্স ফিলিপ এবং জার্মান প্রেসিডেন্ট ইওয়াখিম গাউক ও তাঁর জীবনসঙ্গিনী৷ রানিকে দেখতে নদীর দুই তীরে ভিড় করে দাঁড়িয়ে আপামর জনতা৷
পরে রানিকে চ্যান্সেলরের দপ্তরে স্বাগত জানান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ অত্যাধুনিক স্থাপত্যের চ্যান্সেলারির বারান্দায় দাঁড়িয়ে বার্লিন প্রাকার কোথায় ছিল, রানিকে তা দেখান ম্যার্কেল: ‘‘ঐ ট্রেনটা যেখান দিয়ে যাচ্ছে, ওখানেই ছিল বার্লিন প্রাচীর৷ পূর্ব জার্মানিতে আমি থাকতাম ঐ রেলওয়ে লাইনের ঠিক দু'শ মিটার পিছনে৷''
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন-ও এদিন বার্লিনে পৌঁছন এবং দ্বিপ্রহরে ম্যার্কেলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেন৷ সন্ধ্যার নৈশভোজে উভয়েই উপস্থিত ছিলেন, রানি যখন তাঁর ভাষণে বলেন যে তিনি তাঁর জীবনে ‘‘ইউরোপের সবচেয়ে খারাপ এবং সবচেয়ে ভালো'', দু'টি দিকই দেখেছেন৷ ‘‘আমরা দেখেছি, কত তাড়াতাড়ি পরিস্থিতি খারাপ থেকে ভালোর দিকে যেতে পারে, কিন্তু আমরা জানি যে যুদ্ধপরবর্তী বিশ্বের সুযোগসুবিধাগুলি বজায় রাখার জন্য আমাদের কঠিন পরিশ্রম করতে হবে৷'’
রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতা সংক্রান্ত গণভোটের সময় নীরব ছিলেন৷ এবার যখন ব্রিটেনের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ সম্পর্কে গণভোটের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে এবং ক্যামেরন ইউরোপের বিভিন্ন রাজধানীতে ইইউ-এর প্রয়োজনীয় সংস্কারের ব্যাপারে তাঁর ধ্যানধারণা পেশ করে বেড়াচ্ছেন, ঠিক সেই সময়ে বার্লিনে রানির এই মন্তব্য কিছুটা রাজনৈতিক গুরুত্ব পাচ্ছে বৈকি – অন্তত ভাষ্যকারদের তা-ই ধারণা৷
জার্মান প্রেসিডেন্ট ইওয়াখিম গাউক-ও সরাসরি ‘‘ব্রেক্সিট''-এর ব্যাপারে তাঁর চিন্তাভাবনা তুলে ধরেছেন৷ ‘‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের ব্রিটেনকে প্রয়োজন,'' নৈশভোজে প্রদত্ত ভাষণে বলেছেন গাউক৷ ‘‘এই কারণে ব্রিটেনের কাম্য সংস্কারগুলি সম্পর্কে গঠনমূলক সংলাপ অত্যাবশ্যক৷ জার্মানি সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে এই সংলাপে সহায়তা করবে৷ কেননা ব্রিটেন ইউরোপের অঙ্গ৷''
রাজকীয় অতিথিরা বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ফ্রাংকফুর্ট সফর করবেন এবং সেই অবকাশে ব্যার্গেন-বেলসেন-এর নাৎসি বন্দিশিবির পরিদর্শন করবেন৷
এসি/ডিজি (ডিপিএ, এএফপি, রয়টার্স)