1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আশার আলো

২৩ মে ২০১২

সবার নজর বুধবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন শীর্ষ সম্মেলনের দিকে৷ ইউরোপীয় নেতারা যাবতীয় মতপার্থক্য দূর করে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সুস্পষ্ট পদক্ষেপ নেবেন, এটাই সবার আশা৷

https://p.dw.com/p/150Lc
ছবি: picture-alliance/dpa

সংঘাতের প্রেক্ষাপট

বুধবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ নেতাদের এক বৈঠকে নতুন দিশা দেখা যেতে পারে৷ এতকাল ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নিকোলা সার্কোজি ও জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ইউরোপকে সরকারি ব্যয় কমানো, বাজেট ঘাটতি নিয়ন্ত্রণ ও সংস্কারের পথে চালিত করছিলেন৷ বাকিরাও অনেকটা বাধ্য হয়ে তাদের অনুসরণ করছিল৷

এবার পরিস্থিতি বদলে গেছে৷ ফ্রান্সের নতুন প্রেসিডেন্ট ফ্রঁসোয়া ওলঁদ ম্যার্কেল'এর পথে চলতে প্রস্তুত নন৷ তিনি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর বিষয়টিকেই বেশি গুরুত্ব দিতে চান৷ যেমন তিনি আবারো ‘ইউরোবন্ড' চালু করার প্রস্তাব করেছেন৷ অর্থাৎ যে দেশই ঋণ করুক না কেন, তার দায় ইউরো এলাকার বাকি দেশগুলি সমানভাবে ভাগ করে নেবে৷ নীতিগতভাবে এর বিরোধিতা না করেও বর্তমান পরিস্থিতিতে এই পথে যেতে প্রস্তুত নন ম্যার্কেল৷

সম্মিলিত চাপ

তবে ওলঁদ এবার আর একা নন – ইটালির প্রধানমন্ত্রী মারিও মন্টি, স্পেনের প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানো রাখই ও খোদ ইউরোপীয় কমিশন ‘ইউরোবন্ড' চালু করতে চাইছে৷ কমিশনের আরও কিছু প্রস্তাব রয়েছে৷ অবকাঠামোয় লগ্নি বাড়াতে ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাংক'এর ভূমিকা বাড়ানো, ‘স্থিতিশীলতা বন্ড' চালু করা, জরুরি তহবিলের অর্থ কোনো দেশকে না দিয়ে ব্যাংকিং ব্যবস্থায় ঢালা ইত্যাদি৷

Auftakt G8-Gipfel in Camp David (USA)
ফ্রান্সের নতুন প্রেসিডেন্ট ফ্রঁসোয়া ওলঁদছবি: Reuters

মঙ্গলবার ইইউ মুদ্রা বিষয়ক কমিশনর অলি রেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বলেন, ইউরোপে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আনতে আগামী ৩০শে মে সুনির্দিষ্ট কর্মসূচির প্রস্তাব পেশ করা হবে৷ ইউরোপীয় স্থিতিশীলতা চুক্তির মধ্যেই এই প্রস্তাবগুলি স্থান পেতে পারে৷ সমর্থন আসছে অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা ওইসিডি'র কাছ থেকেও৷ তারাও ইউরোবন্ড চালু করার পক্ষে৷

জনমতের চাপ

অর্থাৎ এই অবস্থায় ম্যার্কেল'ও নিজের অনমনীয় অবস্থান থেকে কিছুটা সরে আসবেন, এমনটাই ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ এমনকি সোমবার দরপতনের পর মঙ্গলবার পুঁজিবাজার আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছে – ঠিক এই আশায়, যে ইইউ সম্মেলনে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির রূপরেখা স্পষ্ট হয়ে উঠবে৷

শুধু রাজনৈতিক স্তরে নয়, সাধারণ মানুষও শুধু ব্যয়সংকোচের নীতির বিরুদ্ধে ভোট দিচ্ছে৷ যে রাজনৈতিক দল বা নেতা ব্যয়সংকোচের পথে হাঁটছে, নির্বাচনে তার পরাজয় ঘটছে৷ এ'প্রসঙ্গে জার্মানির সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি দলের নেতা গ্যার্নোট অ্যার্লার বললেন, ‘‘নির্বাচনে ব্যয়সংকোচের নীতির বিরুদ্ধে মত প্রকাশ করছে মানুষ৷ এই নীতি ব্যর্থ হচ্ছে৷ নেদারল্যান্ডস, রুমেনিয়া, গ্রিস ও ফ্রান্স – সব দেশেই নির্বাচনে মানুষ এর বিরুদ্ধে রায় দিচ্ছে৷''

আন্তর্জাতিক স্তরে উদ্বেগ

ইউরো এলাকার সংকটের বিষয়টি ইউরোপের বাইরেও কতটা গুরুত্ব পাচ্ছে, তা দেখা গেল সপ্তাহান্তে ওয়াশিংটনে আয়োজিত জিএইট শীর্ষ সম্মেলনেও৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা নীতিগতভাবে ওলঁদ'কে সমর্থন করলেও ম্যার্কেল'এর নীতির কোনো বিকল্প দেখাতে পারেন নি, কারণ যে কোনো সরকারি কর্মসূচির জন্য যে বাড়তি অর্থের প্রয়োজন, সেটা যে কোথা থাকে আসবে, তার উত্তর কারো কাছে নেই৷

অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে কোনো মতবিরোধ নেই৷ কারণ গ্রিস, স্পেন, ইটালি সহ অনেক দেশের অর্থনীতির বিপর্যস্ত অবস্থা৷ মতবিরোধ শুধু পন্থা নিয়ে৷ সরকারি কোষাগারের বেহাল অবস্থার উন্নতির জন্য যে প্রচেষ্টা চলছে, তার কোনো ক্ষতি না করে যা করা সম্ভব, ম্যার্কেল'এর নেতৃত্বে জার্মানিও তা করতে প্রস্তুত৷ এই পরিস্থিতিতে ইউরোপীয় কমিশনের তৎপরতাকে স্বাগত জানাচ্ছে সব মহল৷ ‘সাপও মরে, লাঠিও না ভাঙে' – এমনটা করতে পারলে অবশেষে ব্রাসেলস'এর ভাবমূর্তির অভাবনীয় উন্নতির আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা৷

প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন (রয়টার্স, ডিপিএ)

সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য