1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘ইউনিয়ন থাকলে বিপর্যয় কম হতো'

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২১ এপ্রিল ২০১৬

তিন বছর আগে সাভারে রানা প্লাজা ধসে ১,১০০ জন পোশাক শ্রমিক নিহত হন৷ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, রানা প্লাজার পোশাক কারখানাগুলোতে যদি শ্রমিক ইউনিয়ন থাকত, তাহলে হতাহতের সংখ্যা অনেক কম হতো৷

https://p.dw.com/p/1IZaR
রানা প্লাজা ধসে নিহতদের আত্মীয়রা
ছবি: DW/M. Mamun

মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডাব্লিউ) বৃহস্পতিবার তাদের এক প্রতিবেদনে জানায়, রানা প্লাজার কোনো গার্মেন্ট কারখানাতেই নাকি শ্রমিক ইউনিয়ন ছিল না৷ তাদের কথায়, যদি ঐ সব কারখানায় শ্রমিকদের সংগঠন থাকত, তাহলে ফাটল দেখা দেয়ার পরও জোর করে পোশাক শ্রমিকদের সেখানে কাজ করানো যেত না৷ আর তেমনটা হলে ভবন ধসে পড়লেও শ্রমিকরা সেখানে থাকতেন না, অর্থাৎ এত প্রাণহানি ঘটত না৷

এইচআরডাব্লিউ-র অভিযোগ, ‘‘রানা প্লাজা ধসের তিন বছর পরও বাংলাদেশের গার্মেন্ট শ্রমিকরা তাঁদের অধিকার আদায়ের জন্য শ্রমিক সংগঠন করতে গিয়ে দমনপীড়নের, এমনকি কারখানার পক্ষ থেকে হুমকিরও শিকার হচ্ছেন৷''

কল্পনা আখতার

ইউনিয়ন করার চেষ্টা করায় শ্রমিকদের শারীরিক নির্যাতন, ভয় দেখানো ও হুমকি, মিথ্যা অভিযোগসহ অনেকভাবে হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে বলেও জানিয়েছে এইচআরডাব্লিউ৷ তার ওপর সরকারও এ সবের জন্য গার্মেন্ট কারখানাগুলোর বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হচ্ছে৷

এইচআরডাব্লিউ-র কথায়, ‘‘রানা প্লাজা ধসের পর শ্রম আইন সংস্কারের বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ) প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার৷ অথচ এখনও বাংলাদেশে শ্রমিক ইউনিয়ন করার ব্যাপারে কঠোর নীতিমালা রয়েছে, যা আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থি৷''

তারা জানায়, বাংলাদেশের সাড়ে চার হাজার গার্মেন্ট কারখানার মধ্যে শুধুমাত্র ১০ শতাংশ কারখানায় নিবন্ধিত শ্রমিক সংগঠন রয়েছে৷ তাই শ্রমিক সংগঠন করার ব্যাপারে আইনি ও বিদ্যমান বাধাগুলো দূর করার পদক্ষেপ নিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি৷

এইচআরডাব্লিউ-র এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ফিল রবার্টসন প্রতিবেদনে বলেন, ‘স্বাধীন শ্রমিক সংগঠনে বাধা দেওয়ার প্রবণতা শ্রমিক ও বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তির ওপর হুমকিস্বরূপ৷ নিবন্ধিত ইউনিয়নের মাধ্যমে শ্রমিকদের অধিকার চর্চার সুযোগ দেওয়া এবং এ সব ইউনিয়নের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া গার্মেন্ট মালিকদের শাস্তির ব্যবস্থা করার জন্য বাংলাদেশের রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রয়োজন৷'

বাংলাদেশ সেন্টার ফর ওয়ার্কার সলিডারিটি-র নির্বাহী পরিচালক কল্পনা আক্তার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বাংলাদেশে এখন সব মিলিয়ে ৫০০ পোশাক রাখানায় শ্রমিক ইউনিয়নের নিবন্ধন আছে৷ অথচ পোশাক কারখানা প্রায় পাঁচ হাজার৷ এছাড়া যে ৫০০ করাখানায় শ্রমিক ইউনিয়নের নিবন্ধন আছে, তার মধ্যে সার্বেচ্চ ৫০টি কারখানার ইউনিয়ন শ্রমিক প্রতিনিধি দিয়ে করা৷ বাকিগুলোয় মালিকপক্ষের লোকজন দিয়ে নামে মাত্র ইউনিয়ন করা হয়েছে৷ শ্রমিকদের সেখানে কথা বলার সুযোগ নেই৷''

তাঁর কথায়, ‘‘আমরা আশা করেছিলাম রানা প্লাজার ঘটনার পর পরিস্থিতির উন্নতি হবে৷ মালিকপক্ষসহ সবাই সচেতন হবে৷ প্রকৃত শ্রমিক ইউনিয়ন গড়ে তোলা হবে৷ কিন্তু বাস্তবচিত্র খুবই হতাশাজনক৷''

তিনি আরো বলেন, ‘‘শ্রমিক ইউনিয়ন থাকলে শ্রমিকদের নিরপত্তা, কাজের পরিবেশ, মজুরিই শুধু নিশ্চিত হয় না, এতে মালিকরাও লাভবান হন৷ কিন্তু মালিকরা তা বুঝতে চাইছেন না৷''

প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ২৪শে এপ্রিল সাভারের রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় ১,১০০-এরও বেশি গার্মেন্ট শ্রমিক নিহত হন, আহত হন আরো কয়েক হাজার৷ ভবনটিতে কয়েকটি গার্মেন্ট কারখানায় পাঁচ হাজারের বেশি শ্রমিক কাজ করতেন৷

রানা প্লাজা ধসের ঘটনা চাক্ষুস দেখার অভিজ্ঞতা কি আপনার আছে? থাকলে জানান আমাদের৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান