ইউটিউব ভিডিও দেখে আসামি শনাক্ত, গ্রেপ্তার
১৩ জানুয়ারি ২০২২বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, ‘‘ছয় মাস আগে ইউটিউবে ‘ভাঙ্গা তরী ছেড়া পাল' শিরোনামে একটি গান দেখে এক ব্যক্তি র্যাবকে জানায় যে, ওই গানের মডেল সম্ভবত বগুড়ার বিদ্যুৎ হত্যা মামলার আসামি৷ পরে সেই তথ্য যাচাই বাছাই করে হেলাল ওরফে সেলিমকে গ্রেপ্তার করা হয়৷’’
৪৫ বছর বয়সি হেলাল তিনটি হত্যা মামলা এবং একটি চুরির মামলার আসামি৷ আগেও চুরির একটি মামলায় তিনি সাজা খেটেছেন৷
আল মঈন বলেন, ২০০১ সালের একটি হত্যা মামলায় ২০১৫ সালে তার (হেলালের)যাবজ্জীবন সাজা হয়৷ এরপর তিনি আত্মগোপনে চলে যান৷ পরিচয় গোপন করে বড় চুল আর দাড়ি রেখে ‘বাউল সেলিম' নাম নেন৷
তিনি আরও বলেন, বছর পাঁচেক আগে নারায়ণগঞ্জ রেলস্টেশনে কিশোর পলাশ ওরফে ‘গামছা পলাশের' একটি গানের শুটিংয়ের সময় রেললাইনের পাশে এক লোক বাউল গান গাচ্ছিলেন৷ তখন শুটিংয়ের এক লোক তাকে গানের মিউজিক ভিডিওতে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন৷ পরে সেই ‘বাউলকে' ‘ভাঙ্গা তরী ছেড়া পাল' গানের ‘মডেল' হিসেবে দেখা যায় এবং গানটির সাথে সাথে বাউলবেশী ‘সেলিম ফকিরও' পরিচিতি পান৷
২০১৯ সালের ছবিঘর
২০০১ সালে বগুড়ার বিদ্যুৎ হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হেলাল ১৯৯৭ সালে বগুড়ার বিষ্ণু হত্যা মামলা এবং ২০০৬ সালে রবিউল হত্যা মামলারও আসামি৷
সংবাদ সম্মেলনে আল মঈন বলেন, ২০০০ সালে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বগুড়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে হেলালের বাম হাতে মারাত্মক জখম হয় ও পরে ওই হাত অকেজো হয়ে যায়৷
ওই ঘটনার পর তিনি ‘দুধর্ষ হেলাল' ও ‘হাত লুলা' হেলাল হিসেবে পরিচিতি পান সেলিম৷ ২০১০ সালে বগুড়া সদর থানার এক চুরির মামলায় ২০১৫ সালে গ্রেপ্তার হন এবং জেলখাটার পর ওই বছরই জামিনে বের হন৷ বিদ্যুৎ হত্যা মামলার রায়ের পর আবার আত্মগোপনে চলে যান হেলাল৷
আল মঈন বলেন, ‘‘প্রথমে তিনি বগুড়া থেকে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশনে আসেন৷ পরে ট্রেনে চট্টগ্রামে গিয়ে আমানত শাহ মাজারে ছদ্মবেশ ধারণ করে বেশ কিছুদিন অবস্থানের পর সেখান থেকে সিলেটের শাহজালাল মাজারে গিয়ে আরও কিছুদিন কাটান৷’’
সেলিম বিভিন্ন সময়ে দেশের বিভিন্ন রেলস্টেশন ও মাজারে ছদ্মবেশে ছিলেন বলে জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক৷
কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেল স্টেশনে নাম ঠিকানা ও পরিচয় গোপন রেখে সেলিম ফকির নাম ধারণ করেন৷ প্রায় সাত বছর বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ফেরারি জীবন যাপন করেন৷ ভৈরব রেলস্টেশনের পাশে এক নারীর সাথে চার বছর সংসার করেছেন বলেও জানান কমান্ডার আল মঈন৷
বাউলবেশী হেলালের লেখাপড়া অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত৷ এলাকায় মুদি দোকানদার ছিলেন৷ পরে বিভিন্ন রেলস্টেশনে বাউল গান গেয়ে জীবন চালাতেন৷ এক পর্যায়ে নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়েন তিনি৷
এনএস/জেডএইচ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)