ইউক্রেন সংকট: আলোচনা এখনো সেই তিমিরেই
২১ মার্চ ২০২২চতুর্থ সপ্তাহে পড়ল রাশিয়া এবং ইউক্রেনের লড়াই। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, দুই দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনা চললেও এখনো পর্যন্ত সমাধানসূত্রে পৌঁছানো যায়নি। কোনো পক্ষই আপসে রাজি নয়। ফলে আলোচনা কার্যত থমকে আছে।
বেশ কয়েকবার দুই দেশের প্রতিনিধি বেলারুশে বৈঠক করেছেন। আপাতত তারা ভিডিও কলের মাধ্যমে আলোচনা চালাচ্ছেন।
রাশিয়া এবং ইউক্রেনের আলোচনা ঠিক কোন পর্যায়ে আছে, তা নিয়ে নানা মহলে জল্পনাকল্পনা চলছে। এর আগে ইউরোপের বেশ কিছু সংবাদমাধ্যম জানিয়েছিল, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের বেশ কিছু দাবি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি মেনে নিতে রাজি হয়েছিলেন। রাশিয়ার দাবি ছিল, ইউক্রেন ন্যাটোর অংশ হতে পারবে না। ক্রাইমিয়াকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে মেনে নিতে হবে। বিদেশি কোনো রাষ্ট্রকে ইউক্রেনের সেনা ঘাঁটি বানাতে দেওয়া যাবে না। সম্প্রতি পূর্ব ইউক্রেনের যে দুইটি রাজ্য নিজেদের স্বাধীন ঘোষণা করেছে, ইউক্রেনকে তাদের মান্যতা দিতে হবে।
যুক্তরাজ্যের একটি সংবাদমাধ্যম প্রথম জানিয়েছিল, জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেন ন্যাটোর অংশ না হলেও ক্ষতি নেই। দুই দেশের আলোচনা যথেষ্ট এগিয়েছে বলেও সেখানে দাবি কার হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে কি তার কোনো প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে?
বিশেষজ্ঞদের একটি অংশের বক্তব্য, যুদ্ধবিরতি ঘোষণা না করে এই ধরনের আলোচনার কোনো অর্থ হয় না। বৈঠক এখনো পর্যন্ত খুব বেশি এগিয়েছে বলে তারা মনে করছেন না। শুধু তা-ই নয়, বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ইউক্রেনও এখনো পর্যন্ত রাশিয়ার সমস্ত দাবি মানতে রাজি হয়নি। এবং সে কারণেই লড়াই অব্যাহত। অদূর ভবিষ্যতে লড়াই থামবে বলেও তারা মনে করছেন না।
বস্তুত, জেলেনস্কির বক্তব্যেও লড়াই থামার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। সম্প্রতি তিনি ভিডিও কলে ইসরায়েলের পার্লামেন্টে বক্তৃতা দিয়েছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, ''কেন আমরা ইসরায়েলের কাছ থেকে অস্ত্র পাব না? কেন ইসরায়েল ক্রেমলিনের বিরুদ্ধে কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করবে না?'' ইসরায়েল ইউক্রেনের সাধারণ মানুষ এবং বিশেষত ইউক্রেনের ইহুদিদের রক্ষা করতে পারে বলে দাবি করেছেন জেলেনস্কি। এরপরেই ইসরায়েলের কাছে আয়রন ডোম ডিফেন্স সিস্টেম চান জেলেনস্কি। তবে ইসরায়েল তাদের তা দেবে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
জেলেনস্কি যখন এ কথা বলছেন, ঠিক তখনই কিয়েভের সিটি কাউন্সিল জানায়, রাশিয়ার বোমারু আক্রমণে কিয়েভের একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লক ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাঁচজনের মৃত্যুর কথাও বলা হয়।
অন্যদিকে ইউক্রেন দাবি করেছে, মারিউপল বন্দরের কাছে রাশিয়ার এক নৌসেনা কম্যান্ডারের মৃত্যু হয়েছে। কৃষ্ণসাগরে ওই অফিসার লড়াই চালাচ্ছিলেন বলে দাবি করা হয়েছে। বস্তুত, কৃষ্ণসাগরে রাশিয়া প্রায় দুইশ জাহাজ আটকে রেখেছে বলে অভিযোগ। রাশিয়া অবশ্য ইউক্রেনের দাবি নিয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো বিবৃতি প্রকাশ করেনি।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, ডিপিএ, এএফপি, এপি)