ইইউর কাছে ইউক্রেনের আশা

অনেক আশা ও আশ্বাস সত্ত্বেও ইউক্রেন পশ্চিমা বিশ্বের কাছ থেকে গুরুত্ব আর্থিক সহায়তা হাতে পাচ্ছে না৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন মোটা অংকের সহায়তার সিদ্ধান্ত নেওয়া সত্ত্বেও রাজনৈতিক জটিলতার কারণে চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়া যাচ্ছে না৷ চলতি সপ্তাহে ইইউ শীর্ষ সম্মেলনে সেই বাধা দূর হবে, এমন সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে উঠছে৷ ফলে একমাত্র হাঙ্গেরির আপত্তির কারণে যে সিদ্ধান্ত মূলতুবি রাখতে হয়েছিল, সেটি অবশেষে কার্যকর করা সম্ভব হবে৷ ফলে আগামী চার বছরের জন্য ইউক্রেন ব্রাসেলস থেকে ৫,০০০ কোটি ইউরো পেতে পারে৷ সে ক্ষেত্রে রাশিয়ার হামলা প্রতিহত করতে অতি প্রয়োজনীয় গোলাবারুদ ও সামরিক সরঞ্জাম সংগ্রহ করতে পারবে সে দেশ৷

রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সংঘাতের কারণে হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবান যুদ্ধের শুরু থেকেই ইউক্রেন প্রশ্নে যতটা সম্ভব বাধা সৃষ্টি করে আসছে৷ কিন্তু বাকি ইইউ সদস্যদের প্রবল চাপের মুখে তিনি সম্ভবত এবার আপত্তি তুলে নেবেন৷ এর পূর্বশর্ত হিসেবে তিনি সহায়তা ইইউ বাজেট থেকে আলাদা রাখার এবং প্রতি বছর মূল্যায়নের দাবি করেছেন সেই উদ্যোগের অংশ হিসেবে হাঙ্গেরির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেটার সিজায়েতো রাশিয়ার হামলা শুরু হবার পর এই প্রথম ইউক্রেন সফরে যাচ্ছেন৷ সোমবার তিনি সীমান্তবর্তী শহর উঝহোরোদ শহরে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রি কুলেবার সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন৷ জট ছাড়াতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি সরাসরি ওরবানের সঙ্গে আলোচনার যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন, তার প্রেক্ষিতে এই সফর বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে৷ হাঙ্গেরির প্রতি সদিচ্ছার চিহ্ন হিসেবে ইউক্রেনের সংসদে গত ডিসেম্বর মাসে সীমান্তবর্তী হাঙ্গেরীয় জনগোষ্ঠীর ভাষার স্বীকৃতি সংক্রান্ত একটি আইন অনুমোদন করা হয়েছে৷

অবশেষে ইইউ থেকে সহায়তার পথে বাধা দূর হওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হলেও ওয়াশিংটন থেকে এখনো সুখবর আসছে না৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জোরালো উদ্যোগ সত্ত্বেও বিরোধী রিপাব্লিকান দল তাঁর উপর রাজনৈতিক চাপ বজায় রেখে চলেছে৷ এমন পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি সহায়তা সঙ্কোচন সম্পর্কে অ্যামেরিকাকে সতর্ক করে দেন৷ তাঁর মতে, এর মাধ্যমে খারাপ বার্তা পাঠানো হচ্ছে৷ হোয়াইট হাউসে ডনাল্ড ট্রাম্প ফিরে এলে ইউক্রেনের জন্য ‘ভিন্ন' নীতির আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি৷ জার্মানির এআরডি নেটএয়ার্কের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি জার্মানির অর্থনৈতিক জোর কাজে লাগিয়ে ইইউ পর্যায়ে আরো সহায়তার পক্ষে সওয়াল করেন৷ জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেনের প্রতিরক্ষার জন্য ইউরোপকে আরো উদ্যোগ নিতে হবে৷ উল্লেখ্য, অন্য একটি সাক্ষাৎকারে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস ইউরোপের দেশগুলিকে ইউক্রেনের জন্য অঙ্গীকার কার্যকর করার আহ্বান জানিয়েছেন৷

এসবি/এসিবি (এএফপি, রয়টার্স)