আয়া সোফিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে
১৬ জুন ২০২০ইস্তানবুলের আয়া সোফিয়া এখন একটি জাদুঘর৷ কিন্তু ষষ্ঠ শতাব্দীতে এটি ছিল একটি গির্জা৷ পরবর্তীতে এটিকে মসজিদে রূপান্তর করা হয়৷ কিন্তু এর ভবিষ্যত কী? এ নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক৷
তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুসোগলু জানালেন, এর ভবিষ্যত ঠিক হবে ‘জাতীয় সার্বভৌমত্বের’ ভিত্তিতে৷ ‘আন্তর্জাতিক’ মহলের এ ব্যাপারে কথা বলার অধিকার নেই বলেও মনে করেন তিনি৷
আয়া সোফিয়া আবার নামাজ পড়ার জন্য খুলে দেয়া হবে কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে টিভি চ্যানেল এনটিভিতে এক সাক্ষাৎকারে চাভুসোগলু বলেন, ‘‘এটাকে কোনোভাবেই আন্তর্জাতিক ইস্যু না৷’’
আয়া সোফিয়ার স্ট্যাটাস নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তুরস্কের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে টানাপড়েন চলছে৷ ধর্মীয় কট্টরপন্থিরা অনেকদিন ধরে এই ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যকে মুসলিমদের নামাজ পড়ার জন্য খুলে দেয়ার দাবি জানিয়ে আসছে৷
গত মাসে ১৪৫৩ সালে অটোমানদের কন্টানটিনোপল (বর্তমানে ইস্তানবুল) জয়ের বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়া সোফিয়ার ভেতরে নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়৷
চাভুসোগলু বলেন, ‘‘বিজয়ের ৫৬৭ বছর পর কোনো চক্রই ঠিক করে দিতে পারে না ইস্তানবুল বা আয়া সোফিয়া কাদের৷ এখন কেবল তুর্কিরা কী চায়, সেটাই মূল দেখার বিষয়৷’’ এসময় তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ১৪৬২ সালের একটি দলিলও দেখান, যেখানে আয়া সোফিয়াকে মসজিদ হিসেবে দেখানো হয়েছে৷
তবে অনেক তুর্কি মনে করেন দেশটির সেক্যুলার সংবিধানের প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে আয়া সোফিয়া৷
একটি বেসরকারি সংস্থা বর্তমান জাদুঘরটির স্ট্যাটাস চ্যালেঞ্জ করে আদালতে আপিল করে৷ ২ জুলাই এর শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে৷ চাভুসোগলু বলেন, ‘‘আমরা স্টেট কাউন্সিলের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করবো৷’’
বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের অধীনে থাকার সময় গির্জা হিসেবে নির্মাণ হয় আয়া সোফিয়া৷ এরপর অটোমানরা কন্সটানটিনোপল বা ইস্তানবুলের দখল নিলে এটিকে মসজিদে রূপান্তর করা হয়৷ তবে ১৯৩৫ সালে এটিকে রূপ দেয়া হয় জাদুঘরে৷ এখন এর ভেতরে গির্জা ও মসজিদ, ইউরোপীয় ও অটোমান উভয় সংস্কৃতির ছাপ দেখা যায়৷
সাবেক গ্রিক অর্থোডক্স চার্চ আয়া সোফিয়ার অন্য কোনো ধর্মীয় ব্যবহারের পরিকল্পনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে গ্রিস৷ তবে পালটা প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে তুরস্কও৷ দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী চাভুসোগলু গ্রিসকে এ বিষয়ে ‘ভাষণ’ না দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন৷ পাশাপাশি দেশটিকে মনে করিয়ে দিয়েছেন ‘এথেন্সই ইউরোপের একমাত্র রাজধানী যেখানে কোনো মসজিদ নেই৷’
এডিকে/কেএম (ডিপিএ)