1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আহমদিয়াদের ওপর হামলায় পরিকল্পিত উসকানির কথা বলেন পুলিশ সুপার

১০ মার্চ ২০২৩

সারাদেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য একটি স্বার্থান্বেষী মহলের উসকানিতে পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা৷

https://p.dw.com/p/4OUXF
ছবি: Amanur Rahmam/DW

তিনি বলেন, "হামলায় পুলিশ, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনেক সদস্য আহত হয়েছেন৷ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ট্রাফিক পুলিশ বক্স৷ হামলাকারীরা একজন পুলিশ সদস্যকেও পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে৷ তবে বর্তমানে পঞ্চগড়ের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে৷”

বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সিরাজুল হুদা এসব কথা বলেন বলে ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিবেদনে প্রকাশ৷ 

শুক্র থেকে রোববার তিন দিনব্যাপী আহমদিয়া সম্প্রদায় সালানা জলসার আয়োজন করে৷ এই জলসা বন্ধ ও আহমদিয়াদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে বৃহস্পতিবার থেকে পঞ্চগড় শহরে মিছিল ও সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে বিক্ষুব্ধরা৷

এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার জুমার নামাজের পর শহরে বড় মিছিল হয়৷ এ সময় মিছিলকারীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে৷ ট্রাফিক পুলিশের স্টেশন, পঞ্চগড় বাজার মার্কেটে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের লোকজনের দোকানপাট ভাঙচুর এবং  বিকালে আহমদিয়াদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে৷

এ সময় শহরের মসজিদ পাড়া মহল্লার ফরমান আলীর ছেলে আরিফুর রহমান এবং আহমদিয়া সম্প্রদায়ের জাহিদ হাসান নিহত হন বলে জানায় পুলিশ৷

এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার রাতে দুজনকে আহমদিয়ারা গলা কেটে হত্যা করেছে দুষ্কৃতকারীরা এমন গুজব ছড়ায়৷ দুষ্কৃতকারীরা বিভিন্ন স্থানে গিয়ে নিজেরা লাশ দেখে এসেছেন জানিয়ে লোকজনকে উত্তেজিত করে তোলে৷ এ নিয়ে ফের পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় স্থানীয় বিক্ষুদ্ধ জনতা৷ এ সময় দুটি দোকান ভাঙচুর করে মালামাল লুটপাট এবং একটি মাইক্রোবাসে আগুন দেওয়া হয়৷ 

পুলিশ সুপার বলেন, "পরিস্থিতি সামলাতে আমাদের প্রায়োরিটি ছিল কোনো প্রাণহানি যাতে না ঘটে৷ এজন্য কোনো কোনো মহল আমাদের নানা ঘাটতির কথা উল্লেখ করলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমরা সর্বোচ্চ ত্যাগ ও নানা কৌশল অবলম্বন করি৷ এতে পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসে৷

"খুব স্বল্প সময়ে, মাত্র চার ঘণ্টায় গুজব রটনাকারীদের গ্রেপ্তার করা হয়৷ তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হলে এর প্রভাব গোটা দেশেই পড়ত৷”

এ পর্যন্ত ১৩ মামলায় ১৬৫ জনকে যৌথ বাহিনী গ্রেপ্তার করেছে৷ তাদেরকে ভিডিও ফুটেজ, সিসিটিভি ফুটেজ ও স্থিরচিত্র দেখে এবং গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণ ও যাচাই-বাছাইয়ে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷

এদের মধ্যে গুজব সৃষ্টিকারী, উসকানিদাতা ও আহমদিয়া সম্প্রদায়ের জাহিদ হাসান হত্যাকাণ্ডের মামলার দুজন আসামিও আছেন৷ দুজনই তিন দিনের রিমান্ডে আছেন৷ হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে তাদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে৷

এ সময় সাংবাদিকরা আন্দোলনকারী কয়েকজনের নাম উল্লেখ করলে পুলিশ সুপার বলেন, "তদন্তে কারও নাম এলে কেউ ছাড় পাবেন না৷ অকারণে কাউকে গ্রেপ্তার বা হয়রানি করা হবে না৷ তবে অপরাধীদের মনে স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগ ও আতঙ্ক থাকবে৷”

এ সময় তিনি দেশের স্বার্থে গণমাধ্যম কর্মীদের বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার আহ্বান জানান৷

প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) এস এম শফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রাকিবুল ইসলাম, সদর থানার ওসি আব্দুল লতিফ মিঞা উপস্থিত ছিলেন৷

এনএস/এসিবি(বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)