পঞ্চাশের কম বয়সে আল-আকসায় প্রবেশ নিষেধ
২৮ জুলাই ২০১৭ইসরায়েল শুক্রবার সম্ভাব্য ‘‘গোলযোগ ও বিক্ষোভ প্রদর্শন'' সম্পর্কে সাবধান করে দেয় ও ঘোষণা করে যে, টেম্পল মাউন্টে যাওয়ার সুযোগ সীমিত করা হবে৷ স্থানটি ফিলিস্তিনিদের কাছে হারাম আল-শরিফ বা পবিত্র স্থান বলে পরিচিত, আল-আকসা মসজিদ যার অংশ৷
‘‘শুধু ৫০-এর বেশি বয়সি পুরুষদের ও সব বয়সের মহিলাদের প্রবেশ করতে দেওয়া হবে'', বলে পুলিশ একটি বিবৃতিতে ঘোষণা করে৷ ‘‘শহরের প্রাচীন অংশের কয়েকটি রাস্তায় প্রবেশাধিকার সীমিত থাকবে ও যে কোনো ধরনের সহিংসতা রোখা ও তার মোকাবিলা করার জন্য যাবতীয় প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে,'' জানায় পুলিশ৷
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে পবিত্র স্থানটিকে ঘিরে সংঘাত দানা বাঁধছে৷ বৃহস্পতিবার শতাধিক ফিলিস্তিনি পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত হয়৷ ফিলিস্তিনিরা পাথর ও বোতল ইত্যাদি ছুঁড়লে পর পুলিশ স্টান গ্রেনেড ব্যবহার করে৷
‘‘আমরা আল-আকসার জন্য মরতে রাজি!'' জনতা ধ্বনি দেয়৷ পুলিশ জনতাকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে৷
‘‘আমরা শুধু শান্তিতে নামাজ পড়তে চাই'', জেরুসালেমে এক ফিলিস্তিনি ডয়চে ভেলের সাংবাদিকা টানিয়া ক্রেমারকে বলেন৷
সাফিয়া নামের এক ফিলিস্তিনি মহিলা – যিনি তাঁর পুরো নাম বলতে চাননি – বৃহস্পতিবার ডয়চে ভেলেকে বলেন: ‘‘আমি সত্যিই আশা করি যে, ওরা সব গেট খুলে দেবে৷'' নয়ত গোলযোগ থামবে না, বলে তাঁর আশঙ্কা৷
ফিলিস্তিনি বয়কটের অন্ত
আল-আকসা প্রাঙ্গণে নতুন নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে ফিলিস্তিনিরা গত দু'সপ্তাহ ধরে যে বয়কট চালিয়ে আসছে, বৃহস্পতিবার ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস তার অন্ত ঘোষণা করেন৷ কিন্তু তার পরেই নতুন সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে৷
‘‘ওরা আমাদের নিয়ে খেলা করছে: কখনো একটা গেট খুলছে, কখনো অন্য গেটগুলো বন্ধ করছে৷ আমরা শুধু আমাদের মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়তে চাই'', মোহাম্মেদ নামের এক ফিলিস্তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন৷ সাফিয়ার মতো ইনিও নিজের পুরো নাম বলতে চাননি৷
এ মাসের সূচনায় আল-আকসা মসজিদের প্রবেশপথে তিনজন আরব বন্ধুকধারী গুলি চালিয়ে দু'জন ইসরায়েলি পুলিশ কর্মকর্তাকে হত্যা করার পর ইসরায়েল মেটাল ডিটেক্টর ও সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর নির্দেশ দেয়৷ ফিলিস্তিনিরা এই পদক্ষেপকে টেম্পল মাউন্টের উপর ইসরায়েলিদের নিয়ন্ত্রণ বাড়ানোর প্রচেষ্টা হিসেবে গণ্য করে৷
নতুন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়োগের পর যে সংঘাত চলেছে, তাতে পাঁচজন ফিলিস্তিনি ও চারজন ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন৷
ফিলিস্তিনি তরুণের জন্য মৃত্যুদণ্ড?
যে ১৯ বছর বয়সি ফিলিস্তিনি তরুণ পশ্চিম তীরের একটি ইসরায়েলি বাসভবনে ঢুকে তিনজন ইসরায়েলিকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে, তাকে মৃত্যুদণ্ড দেবার প্রস্তাব দিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু৷ শোকাহত পরিবারটির সঙ্গে সাক্ষাতের পর নেতানিয়াহু বলেন, ‘‘আমি পরিবারটিকে বলেছি, চরম ঘটনার ক্ষেত্রে সন্ত্রাসবাদীদের মৃত্যুদণ্ড দেবার সময় এসেছে৷'' তাঁর ফেসবুক পেজে পোস্ট করা ভিডিও-তে নেতানিয়াহু এই মন্তব্য করেন৷
ইসরায়েলি আইনে মৃত্যুদণ্ডের ব্যবস্থা আছে – তবে তা এযাবৎ মাত্র একবার প্রয়োগ করা হয়েছে৷ ১৯৬২ সালে নাৎসি যুদ্ধাপরাধী আডল্ফ আইখমানকে ইসরায়েলে ফাঁসি দেওয়া হয়৷
এসি/ডিজি (এপি, এএফপি, রয়টার্স)
ইসরায়েলের এই সিদ্ধান্তকে আপনি কিভাবে দেখছেন? মন্তব্য লিখুন নিচের ঘরে৷