1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আলোচনা ছাড়াই সংসদে কৃষি আইন প্রত্যাহার

৩০ নভেম্বর ২০২১

শীত অধিবেশনের প্রথম দিনেই তিনটি বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহার করলো মোদী সরকার। তবে কোনো আলোচনা ছাড়া।

https://p.dw.com/p/43eBL
সংসদে তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার করলো সরকার। ছবি: picture-alliance/dpa/STR

এক বছর ধরে দিল্লির সীমানায় বসে আন্দোলনরত কৃষকদের দাবির কাছে তিনি যে নতিস্বীকার করেছেন তা আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি দেশের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়ে জানিয়েছিলেন, সরকার তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার করে নেবে। সংসদের শীত অধিবেশনের প্রথম দিন সোমবারেই তা প্রত্যাহার করলো কেন্দ্রীয় সরকার। তবে বিরোধীরা এনিয়ে আলোচনা চেয়েছিল। কিন্তু সরকার দাবি মানেনি। মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে তা লোকসভায় পাস হয়ে যায়। পরে তা রাজ্যসভাতেও বিনা আলোচনায় পাস হয়।

কৃষক সংগঠনের বক্তব্য

সংযুক্ত কৃষক মোর্চা (এসকেএম) এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিল। আইন প্রত্যাহারের পরে তারা একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, ''ইতিহাস তৈরি হলো। কৃষকদের আন্দোলন জয়ী হলো। তবে আমাদের আরো গুরুত্বপূর্ণ দাবি আছে, যা এখনো মানা হয়নি।''

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ''কৃষক-বিরোধী কালা কানুন ভারতীয় সংসদে কোনো আলোচনা ছাড়াই প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। কৃষক আন্দোলনের চাপে সরকার এই ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয়েছে।''

কৃষকরা এখন তাদের ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের গ্যারান্টি চাইছেন। অর্থাৎ, সরকার কৃষকদের কাছ থেকে ফসল কেনার ন্যূনতম দাম বেঁধে দেবে। সেই ঘোষণা আইনসঙ্গত হবে। কেউ তার থেকে কম দামে ফসল কিনলে আইনি ব্যবস্থা নিতে বাধ্য থাকবে সরকার। তাছাড়া তাদের দাবি, মৃত কৃষকদের স্মৃতিতে সরকারকে একটি মেমোরিয়াল বানাতে হবে, আর যারা কৃষকদের বিরুদ্ধে কাজ করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে হবে। এই দাবিগুলি সরকার মানেনি।

কীভাবে আইন প্রত্যাহার

বিরোধীদের দাবি ছিল, আইন প্রত্যাহার করার বিলটি নিয়ে আলোচনা করতে হবে। বিরোধীদের কথা সরকারকে শুনতে হবে। কিন্তু সেই দাবি মানা হয়নি। লোকসভা ও রাজ্যসভায় বিলটি ধ্বনিভোটে গৃহীত হয়।

বিরোধীদের বক্তব্য

কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী তির্যকভাবে বলেছেন, ''বিজেপি বলছে, আইন যখন প্রত্যাহারই করে নেয়া হচ্ছে, তখন আলোচনার কী দরকার? তাহলে সংসদেরই বা কী দরকার? প্রধানমন্ত্রী যা বলার বলে দিন। আইন তৈরি করে নিন। তা হলেই হবে।'' রাহুলের মতে, ''কৃষক আন্দোলনের শক্তি কতটা তা প্রমাণ হয়ে গেল।'' 

তার অভিযোগ, ''এই সরকার গরিব-বিরোধী। সরকার দাবি করছে, তারা কৃষকদের পুাশে আছে। যদি তাই থাকে, তাহলে কেন এক বছর ধরে কৃষকদের আন্দোলনের পর সরকার আইন প্রত্যাহার করলো? কেন তারা ৭০০ কৃষককে এভাবে মরতে দিল?''

তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র ও সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায় বলেছেন, উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর-খেরিতে বিজেপি-র গুণ্ডারা কৃষকদের উপর গুলি চালিয়েছে। আন্দোলনে নামার পর ৭০০ কৃষক মারা গেছেন। অথচ সরকার কোনো আলোচনা করতে দিচ্ছে না।

কেন আলোচনা নয়

এর আগে আইন প্রত্যাহার করার জন্য নিয়ে আসা বিলে সংসদে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু এবার বিরোধীদের দাবি মানা হলো না কেন? প্রবীণ সাংবাদিক শরদ গুপ্তা ডয়চে ভেলেকে বলেছেন,, ''উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব সহ বেশ কিছু রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন আসছে। কৃষক আন্দোলন চলতে থাকলে ভোটে তার বিরূপ প্রভাব পড়ত। তাই তিনটি কৃষি আইন বাতিল করা হলো।'' শরদ মনে করেন, ''এই নিয়ে বিরোধীরা সংসদে সরকারের সমালোচনা করবে সেটা চায়নি সরকার। তাছাড়া বিরোধীরা দাবি করতে পারে, কিন্তু সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার স্পিকার ও চেয়ারম্যানের।''

বিজেপি-র বক্তব্য

সংসদীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ প্যাটেল বলেছেন, ''বিরোধীরা আইন প্রত্যাহারের দাবি করেছিলেন। সরকার আইন প্রত্যাহার করছে। তাও বিরোধীরা হাঙ্গামা করছেন।'' সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নাকভির মতে, ''বিরোধীরা রাজনীতি করতে চাইছে। তারা শুধু রাজনৈতিক লাভের কথাই চিন্তা করছে।''

জিএইচ/এসজি (পিটিআই, এএনআই)