‘আর্টিফিশিয়াল সুইটেনার’
২২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ডায়াবেটিস রোগী হলে কম ক্যালরি যুক্ত খাবার, অপেক্ষাকৃত কম সোডিয়াম যুক্ত ফল, কম লবণ, কম তেল এবং বিশেষ করে চিনি মুক্ত খাবার খাওয়া জরুরি৷ কিন্তু মিষ্টি খেতে কে না ভালোবাসে বলুন? তাই ডায়াবেটিস রোগীর খাবার মিষ্টি করতে এতদিন পর্যন্ত ‘আর্টিফিশিয়াল সুইেটনার' ব্যবহার করার একটা চল ছিল৷ বাংলায় যাকে আগে এক কথায় ‘স্যাকারিন' বলা হতো!
চায়ে, গরম দুধে, এমনকি রান্নাতেও এই কৃত্রিম মিষ্টি উৎপাদক এবং ‘ক্যালরি মুক্ত' সুইটেনার ব্যবহার করতেন অনেকে৷ কিন্তু সাম্প্রতিক এক গবেষণা বহুমূত্র রোগীদের শেষ ভরসাটাকেও যেন ছিনিয়ে নিল৷
ইসরায়েলি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘ওয়াইজমান ইন্সটিটিউট অফ সায়েন্স'-এর দুই গবেষক এরান এলিনাভ এবং এরান সেগাল তাঁদের দীর্ঘদিনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানালেন, ‘আর্টিফিশিয়াল সুইটেনার'-এর নিয়মিত এবং অতিরিক্ত ব্যবহার ডায়াবেটিস টাইপ-২ হওয়ার প্রবণতা বাড়িয়ে দেয়৷
মূলত তিন ধরনের ‘আর্টিফিশিয়াল সুইটেনার' বাজারে পাওয়া যায় – অ্যাসপারটেম, সুক্রালোস এবং স্যাকারিন (দক্ষিণ এশিয়ায় এটাই সবচেয়ে বেশি প্রচলিত)৷ এরান এলিনাভ এবং এরান সেগাল জানান, এগুলি যদি বেশি পরিমাণে নেওয়া হয়, তবে শরীরে ‘গ্লুকোজ ইনটলারেন্স' দেখা দেয়, যা পরবর্তীতে ডায়াবেটিসের রূপ ধারণ করে৷
তার ওপর অ্যাসপারটেম নাকি শরীরের ‘হ্যাপি হরমোন' বা সেরোটোনিন-কে নষ্ট করে ফেলে, যা ‘লিবিডো' বা যৌন ইচ্ছাকে কমিয়ে দেয়৷
এলিনাভ এবং সেগাল-এর গবেষণাটি এখনও পর্যন্ত ইঁদুরের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও, তাঁদের ধারণা এটা মানুষের শরীরেও একইভাবে কাজ করবে৷ স্কটল্যান্ডে এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ইনটেগ্রেটিভ ফিসিওলজি'-র অধ্যাপক জন মেনজিস অবশ্য বললেন অন্য কথা৷ তাঁর কথায়, প্রতিটি মানুষের শারীরিক গঠন যেমন আলাদা, তেমনই খাওয়া-দাওয়ার ধরণও আলাদা৷ তাই কে কতটা পরিমাণ সুইটেনার খাচ্ছেন, তার ওপরও অনেক কিছু নির্ভর করছে৷
তাই ছোট্ট এই ‘ম্যাজিক বাটন' বা ‘বোতাম'-গুলো যে নামে মাত্রই ক্ষতিকারক – সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না৷
প্রসঙ্গত, বিশ্বব্যাপী প্রায় ৩৫ কোটি মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত৷ আর ২০৩০ সাল নাগাদ গোটা বিশ্বে আনুমানিক ৭.৮ শতাংশ মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে৷
ডিজি/এসি (এএফপি, এপি)