আফগান ঐক্যের প্রতীক
২৯ এপ্রিল ২০১৪আফগানিস্তানে নতুন সরকার গঠনের পেছনে এবার পশতু নয়, হয়ত ফার্সিভাষিদেরই থাকবে প্রাধান্য৷ আফগানিস্তানে অনেক ধরনের উপজাতীর বাস৷ এদের মধ্যে পশতুনরাই বর্তমান সরকারে সংখ্যাগরিষ্ঠ এবং দক্ষিণে তাঁদের আধিপত্য বেশি৷ কিন্তু উত্তরের চিত্র একেবারেই ভিন্ন৷ সেখানে ফার্সিভাষি তাজিকরা সংখ্যাগরিষ্ঠ৷ আব্দুল্লাহর জন্য এটা এক দিক দিয়ে ইতিবাচক৷ কেননা পশ্চিমা বিশ্বের কাছে এরই মধ্যে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়েছে, তাছাড়া দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম উপজাতি গোষ্ঠীর সমর্থন রয়েছে তাঁর সাথে৷ তাই ধারণা করা হচ্ছে তিনিই গঠন করতে যাচ্ছেন পরবর্তী সরকার৷
আব্দুল্লাহ আর একটি বড় ‘ট্রাম্প কার্ড' হলো তিনি বেড়ে উঠেছেন পশতুন-তাজিক মিশ্র সম্প্রদায়ে৷ ফলে তাঁর পরিবারে উভয় গোষ্ঠীর মানুষ রয়েছেন৷ ফলে দুই সম্প্রদায়কে এক করার একটা বড় সুযোগ আছে তাঁর হাতে৷ দ্বিতীয় দফা ভোটে সেটাই প্রমাণ করতে হবে তাঁকে৷ সমর্থন টানতে হবে দু'পক্ষের৷ তিনি যে এই মিশ্র সম্প্রদায়ের মধ্যে বেড়ে উঠেছেন, তার ছাপ পাওয়া যায় তাঁর ব্যক্তিত্ব এবং রাজনৈতিক মতাদর্শে৷ তবে এটা ঠিক আফগানিস্তানে বাস্তবতা সবসময়ই ভিন্ন৷
উপজাতীয় জোট
প্রথম দফায় মোট ভোটের ৪৪.৯ ভাগ পেয়েছেন আব্দুল্লাহ৷ উত্তরাঞ্চলের উপজাতীয় জাতি গোষ্ঠীর কাছে এরই মধ্যে রাজনৈতিক হিরোতে পরিণত হয়েছেন তিনি৷ তাজিকরা বরাবরই তালেবান জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছেন সেখানে৷ নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে উত্তরাঞ্চলে আব্দুল্লাহ পেয়েছেন ৮০ শতাংশেরও বেশি ভোট৷ তবে দক্ষিণ ও পূর্বে যেখানে পশতুনদের আধিক্য, সেখানে পেয়েছেন মাত্র ৩ শতাংশের কিছু বেশি ভোট৷ প্রথম দফা ভোটে পশতু ভাষিরা পশতুন প্রার্থীকেই তাঁদের ভোট দিয়েছেন৷ এ কারণে আব্দুল্লাহর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আশরাফ গনি মোট ভোটের ৩১.৫ শতাংশ পেয়েছেন, যার বেশিরভাগই এসেছে পশতুন ভোটারদের কাছ থেকে৷
জয় পেতে হলে
দ্বিতীয় দফায় আব্দুল্লাহ কতটা ভোট পাচ্ছেন তার উপর নির্ভর করছে তাঁর বিজয়৷ এক্ষেত্রে পশতুন ভোটারদের মন জয় করাটাই তাঁর জন্য মুখ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ আর উত্তর অঞ্চল দেশের অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি হিসেবে পরিচিত৷ সেখানে যেমন রয়েছে প্রাকৃতিক গ্যাস তেমনি নিরাপত্তা ব্যবস্থাও অনেকটা স্থিতিশীল৷ এই বিষয়গুলো যদি ভোটারদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া যায় তবেই হয়ত সাফল্য আসবে৷ তাই এখন দেখার বিষয় উত্তর ও দক্ষিণের সমান জনপ্রিয়তা পেতে আব্দুল্লাহ কতটা সমর্থন হন৷