আবার রিয়েলিটি শো’র বলি হল শিশু
২২ ফেব্রুয়ারি ২০১১মাত্র ৯ বছরের সন্দীপ মন্ডল অভিমানে আত্মঘাতী হয়েছে সম্প্রতি, কারণ একটি রিয়েলিটি শোয়ের অডিশনে যোগ দিতে যাওয়ার পথখরচা তাকে দিতে তার মা রাজি হননি৷ মায়ের রাজি না হওয়ার কারণ, এর আগেও বেশ কিছু রিয়েলিটি শোয়ের অডিশনে নাম লিখিয়েছিল সন্দীপ, কিন্তু কোনওবারই কৃতকার্য হয়নি৷ এবার ওর মা বলেছিলেন, সংসারের যা আর্থিক অবস্থা, বারবার পয়সা দেওয়া যাবে না৷
সন্দীপের আত্মহত্যার পর, সাধারণ মানুষ এবং বিশেষ করে সংবাদমাধ্যম দোষ দিচ্ছে বিভিন্ন রিয়েলিটি শোয়ের প্রযোজকদের, যারা রঙিন স্বপ্নের ফানুস উড়িয়ে জনপ্রিয়তা বাড়াতে গিয়ে কার্যত এই ধরণের শো সম্পর্কে একটা উন্মাদনা তৈরি করছেন৷
বাংলা টিভি-র প্রথম রিয়েলিটি শো ‘রোজগেরে গিন্নি'র প্রযোজনার সঙ্গে দীর্ঘদিন যুক্ত ছিলেন অনিরুদ্ধ ধর৷ তিনি কিন্তু এই অভিযোগ একেবারেই মানতে নারাজ৷
দোষটা কি তাহলে বাবা-মায়েদের? তাঁরা যে অনেক সময়ই ভুলে যান কোথায় থামতে হবে, খ্যাতি অথবা অর্থের জন্য ছেলেমেয়েদের কতদূর ঠেলে দেওয়া যাবে, সেই অভিযোগ কিছুটা স্বীকার করে নিচ্ছেন মৃত সন্দীপেরই সমবয়সী একটি কন্যাসন্তানের মা সোমা দস্তিদার৷
শুধু নিজের মেয়েকেই নয়, পেশায় শিক্ষিকা সোমা আরও অনেক বাচ্চাকে বড় করে তোলার দায়িত্ব নিয়েছেন৷ তাহলে তিনি কী শেখাবেন তাদের? খুব যুক্তিপূর্ণ একটা উত্তর দিলেন সোমা, যে সাফল্যের সঙ্গে ব্যর্থতা মেলে নেওয়ার শিক্ষাও খুব জরুরি৷
সদ্য কৈশোরে পা দেওয়া সন্দীপের অকালমৃত্যু সম্ভবত আরও একটা শিক্ষা সমাজকে দিয়ে গেল৷ যে সবাইকে পড়াশোনাতেই ভাল হতে হবে, তার কোনও মানে নেই৷ একটি শিশুর স্বাভাবিক প্রবৃত্তি, সহজাত দক্ষতা কোনদিকে, সেটাও বাবা-মায়েদের, শিক্ষকদের খেয়াল রাখা দরকার৷ তাহলে হয়তো সন্দীপদের এভাবে অকালে হারিয়ে যেতে হবে না৷
প্রতিবেদন: শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন