আফগানিস্তান ছেড়ে যাবে জার্মানি?
১৩ মার্চ ২০১৮প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে ন্যাটো বাহিনীর সৈন্যরা চলে যাওয়ার পর আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটে৷ ফলে সেখানে বেসামরিক সহায়তা দেয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে৷ বর্তমানে শুধুমাত্র ‘নিরাপদ ও প্রবেশ করা যায়' এমন এলাকায় জার্মান ত্রাণকর্মীরা কাজ করছেন বলে জানানো হয়েছে৷ আর আফগান সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেয়ার যে পরিকল্পনা আছে জার্মান সেনাবাহিনীর, তার মধ্য থেকে নিরাপত্তাজনিত কারণে মাত্র ‘অর্ধেক' কর্মসূচি বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে, বলেও জার্মান সরকারের ঐ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়৷
এদিকে, বেশি জনসংখ্যা অধ্যুষিত এলাকায় নিরাপত্তা দিতে গ্রামাঞ্চল থেকে নিরাপত্তা প্রহরা সরিয়ে বড় শহরগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করেছে আফগান সরকার৷ কিন্তু তারপরও হামলা বন্ধ করা যাচ্ছে না৷ গত মে মাসে ট্রাক বোমা হামলায় কাবুলের জার্মান দূতাবাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷ সেই থেকে জার্মান রাষ্ট্রদূত ও দূতাবাসের কর্মকর্তারা এখনও মার্কিন দূতাবাসে অতিথি হয়ে আছেন৷
তারও আগে ২০১৬ সালের নভেম্বের তালেবানের হামলায় মাজার-ই-শরিফে অবস্থিত জার্মান কনস্যুলেট ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷ সেটি এখন আর ব্যবহারযোগ্য অবস্থায় নেই৷ ফলে কনস্যুলেটের কর্মকর্তা ও জার্মান উন্নয়ন সংস্থা জিআইজেড-এর কর্মীরা পার্শ্ববর্তী একটি জার্মান সামরিক কেন্দ্রে অবস্থান করছেন৷
২০০৩ সাল থেকে উত্তর আফগানিস্তানে জার্মান সেনা মোতায়েন আছেন৷ সেখানে বর্তমানে সাড়ে নয়শ'র মতো সেনা আছেন৷ কিন্তু পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন বলছে, নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় সেখানে জার্মান সেনা সংখ্যা আরও বাড়ানো উচিত৷
এদিকে, ন্যাটো বাহিনী চলে যাওয়ার পর আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় অনেক আফগান দেশ ছেড়ে যাচ্ছেন৷ এদের একটি বড় অংশ আসছেন জার্মানিতে৷ অর্থনৈতিক অবস্থার সন্তোষজনক উন্নতি না হওয়া, দুর্নীতি, নিরাপত্তা পরিস্থিতি, জনসংখ্যা প্রবৃদ্ধি - এসব কারণে আফগানরা দেশ ছাড়ছেন বলে জার্মান সরকারের ঐ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে৷
জানা যায়, বর্তমানে প্রায় আড়াই লক্ষ আফগান নাগরিক জার্মানিতে বসবাস করছেন৷ এদের মধ্যে ১৫ হাজার জনকে আফগানিস্তানে ফেরত পাঠাতে চায় জার্মানি৷ কিন্তু জার্মান সরকারের চোখে যে দেশের পরিস্থিতি এত খারাপ সেখানে মানুষদের ফেরত পাঠানো ঠিক কিনা তা নিয়ে জার্মানিতেই বিতর্ক আছে৷
স্যান্ড্রা পেটারসমান/জেডএইচ
বন্ধু, প্রতিবেদনটি নিয়ে আপনার মন্তব্য লিখুন নীচের ঘরে৷