আফগানিস্তানে বোমা হামলায় বহু হতাহত
৬ ডিসেম্বর ২০১১কাবুলে হামলা
আফগান রাজধানী কাবুলে মঙ্গলবার দুপুরে একটি মাজারে বোমা বিস্ফোরণ ঘটে৷ হামলার ধরন আত্মঘাতী৷ সেদেশের শিয়া মুসলমানরা আশুরা পালনের উদ্দেশ্যে একটি মাজারে সমবেত হয়েছিল৷ আফগান প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ থেকে সেই মাজারের দূরত্ব মাত্র ৫০০ মিটার৷ কাবুলের অপরাধ তদন্ত বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ জহির জানান, বোমা হামলায় নিহতদের মধ্যে নারী এবং শিশুর সংখ্যা বেশি৷ হামলায় ৫০ ব্যক্তি নিহতের পাশাপাশি আহতের সংখ্যা শতাধিক বলেও জানান তিনি৷ বোমা বিস্ফোরণের প্রত্যক্ষদর্শী মোস্তফা বার্তাসংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, প্রচণ্ড শব্দ হয়েছিল, মনে হচ্ছিল আমি বধির হয়ে গেছি৷ বিস্ফোরণের ধাক্কায় মাটি থেকে তিন মিটার উপরে ছিটকে যাই৷
মাজার-ই-শরীফে হামলা
কাবুল এবং মাজার-ই-শরীফে খুব কাছাকাছি সময়ে বোমা বিস্ফোরণ ঘটে৷ মাজার-ই-শরীফের প্রধান মসজিদে যে বোমার বিস্ফোরণ ঘটেছে, সেটি সম্ভবত সাইকেলে বাঁধা ছিল৷ স্থানীয় পুলিশের উপপ্রধান আব্দুল রউফ তাজ জানিয়েছেন, আশুরা পালনকারী একদল শিয়া মুসলিম মসজিদের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বিস্ফোরণ ঘটে৷ এতে চারব্যক্তি নিহত এবং সতের জন আহত হয়েছে, জানান তাজ৷
বিরল হামলা
আফগানিস্তানে আন্তর্জাতিক বাহিনী কিংবা সেদেশের সরকারি কর্মকর্তাদের উপর বোমা হামলার ঘটনা শোনা গেলেও, শিয়াদের উপরে হামলাতো সচরাচর দেখা যায়না৷ সেদেশে শিয়া এবং সুন্নিদের মধ্যে বিরোধ থাকলেও এমন বড় হামলার ঘটনা বিরল৷ কাবুলের শিয়া নেতা মোহাম্মদ বাকিরও স্বীকার করেছেন, এত বড় মাত্রার হামলা সর্বশেষ কবে ঘটেছিল তিনি মনে করতে পারছেন না৷ তিনি একে আখ্যা দিয়েছেন, ‘‘আশুরার দিনে মুসলমানদের উপরে হামলা'' হিসেবে৷ আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই জানিয়েছেন, আফগানিস্তানে এই প্রথম একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় দিনে ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে৷ তবে তালেবান এই হামলার দায় স্বীকার করেনি, বরং অস্বীকার করেছে৷
উল্লেখ্য, জার্মানির বন শহরে আফগানিস্তান সম্মেলনের মাত্র একদিন পরেই আফগানিস্তানে ভয়াবহ এই বোমা হামলা হয়েছে৷ বিবিসি জানিয়েছে, আফগান নিরাপত্তা কর্মকর্তারা শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, বন সম্মেলন থেকে সবার নজর অন্যদিকে সরাতে কাবুলে হামলা হতে পারে৷
প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক