‘গ্রিন-অন-ব্লু’ হামলা
১১ আগস্ট ২০১২গত শুক্রবারই প্রাণ হারিয়েছে ছয় বিদেশি সেনা৷ এদের মধ্যে তিন মার্কিন সেনাকে আহারের নিমন্ত্রণ জানিয়ে গুলি করে হত্যা করেছে এক আফগান পুলিশ সদস্য৷ অপর তিন সেনা প্রাণ হারায় ন্যাটো শিবিরে কর্মরত এক বেসামরিক আফগান নাগরিকের গুলিতে৷ এছাড়া গত মঙ্গলবার সেদেশের পূর্বাঞ্চলে আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর পোশাক পরিহিত দুই ব্যক্তির গুলিতে প্রাণ হারায় এক বিদেশি সেনা৷ সামরিক বাহিনী এবং আফগান কর্মকর্তারা জানিয়েছে এই তথ্য৷
আফগানিস্তানে ন্যাটোর এক লাখ ত্রিশ হাজার সেনা মোতায়েন রয়েছে৷ মূলত তালেবান জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়তে সেদেশের সরকারকে সহায়তা করাই ছিল এই বিদেশি সেনাদের উদ্দেশ্য৷ তবে বর্তমানে তারা আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদেরকে প্রশিক্ষণে বেশি সময় ব্যয় করছে৷ কেননা, ২০১৪ সাল নাগাদ আফগানিস্তান ত্যাগ করবে বিদেশি সেনারা৷
‘গ্রিন-অন-ব্লু' হামলা, অর্থাৎ আফগান সেনাদের হামলায় তাদের সহযোদ্ধা বিদেশি সেনাদের মৃত্যুর ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে আফগানিস্তানে৷ ন্যাটোর হিসেব অনুযায়ী, চলতি বছর আফগান সেনাদের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছে ৩৪ বিদেশি সেনা৷ কাবুলে অবস্থানরত লেখক এবং বিশ্লেষক আহমেদ রাশেদ মনে করেন, এসব হামলার কারণে আফগানদের সঙ্গে যোগাযোগ এবং তাদেরকে প্রশিক্ষণ প্রদানের সময় ন্যাটো সেনারা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে আরো বেশি সোচ্চার হবে, ফলে দু'পক্ষের মধ্যকার দূরত্ব আরো বেড়ে যাবে৷
বিদেশি সেনাদের উপর এধরনের হামলার কয়েকটির দায় স্বীকার করেছে তালেবান জঙ্গি গোষ্ঠী৷ তাদের দাবি, আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে তালেবান সদস্যদেরকে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ তবে অনেকেই মনে করেন, স্থানীয় এবং বিদেশি সেনাদের মধ্যকার সাংস্কৃতিক বিভেদ ও শত্রুতার কারণে এধরনের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে৷
ন্যাটো নেতৃত্বাধীন আইসাফ বাহিনীর প্রধান মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গুন্টার কার্টস এই বিষয়ে বলেন, ‘‘আমার যা খুঁজে পেয়েছি তা হচ্ছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ব্যক্তিগত অসন্তোষ এবং কষ্টকর পরিস্থিতির কারণে এসব ঘটছে৷''
গুন্টার কার্টস তথাকথিত ‘গ্রিন-অন-ব্লু' হামলাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে মনে করছেন৷ তবে তিনি স্বীকার করেছেন, এধরনের হামলা আগের চেয়ে বেড়ে গেছে৷ বিশেষ করে, ২০১১ সালে এরকম ২১টি ঘটনায় প্রাণহানির সংখ্যা ছিল ৩৫৷ চলতি বছর এধরনের হামলায় এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৩৪৷
এআই / জেডএইচ (রয়টার্স, ডিপিএ)