নতুন আইন অবৈধ
২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৩নতুন আদালত অবমাননা আইনে (সংশোধানী ২০১৩) বেশ কিছু বিশেষ সুবিধা দেয়া হয়েছিল সরকারি কর্মকর্তাদের৷ এগুলো হল, সরকারি কর্মকর্তারা অবসরে গেলে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা আর থাকবেনা৷ আদালতের আদেশ পালন বাধ্যতামূলক হবেনা৷ পালনে ব্যর্থ হলে এবং তা সরল বিশ্বাসে হলে, তা অপরাধ হবেনা৷ আদালত অবমাননা মামলার শুরুতে সরকারি কর্মকর্তাদের হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়া যাবেনা৷
অন্যদিকে সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবর বা তথ্য যদি ভুল এবং তা সরল বিশ্বাসে হয়, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যাবেনা৷ বিচারকদের খাস কামরায় বিচারিক প্রক্রিয়ার তথ্য প্রকাশ আদালত অবমাননা নয়৷
নতুন এই আইনের বিরুদ্ধে রিট করা হলে বৃহস্পতিবার দুই পক্ষের শুনানি শেষে রায় দেয়া হয়৷ হাইকোর্টের বিচারপতি কাজী রেজাউল হক এবং বিচারপতি এবিএম আলতাফ হোসেনের বেঞ্চ আদালত অবমাননার নতুন আইনকে অবৈধ ঘোষণা করেন৷
এই মামলার আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরশেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, এটি একটি যুগান্তকারী রায়৷ এই রায়ের ফলে প্রশাসনে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে৷ তিনি আরও বলেন, ‘‘নতুন আইনে সরকারি প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কিছু বিশেষ সুবিধা দেয়া হয়েছিল৷ যার ফলে তাঁরা স্বেচ্ছাচারী হয়ে উঠতে পারতেন৷ তাঁদের স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার আওতায় আনা যেতনা৷''
অন্যদিকে সংবাদ মাধ্যমের ব্যাপারে তিনি বলেন, অসত্য খবর বা তথ্য প্রকাশ সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা নয়৷ তাদের স্বাধীনতার সঙ্গে দায়িত্বশীলতার পরিচয়ও দিতে হবে৷ তাঁর মতে, এই আইন বাতিল হওয়ায় দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার পথ আরো প্রশস্ত হবে৷ মনজিল মোরশেদ জানান, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ও এ ধরনের একটি আইন করা হয়েছিল, যা পরে বাতিল হয়৷
এদিকে আদালত তার রায়ে বলেছেন, ‘‘আমরা চাইনা কারো হাত বাঁধা থাকুক৷ প্রেস এখন শক্তিশালী মাধ্যম৷ আমরা প্রেসকে লিমিট করতে চাইনা৷ আবার প্রেসও যেন লিমিটের বাইরে না যায়৷ আমরা প্রতিদিনই প্রেসের সহায়তা নিই৷''