আদালতের চাপ সত্ত্বেও গাজায় ইসরায়েলের অভিযান চলছে
২১ মে ২০২৪আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতের প্রধান প্রসিকিউটর করিম খান হামাস ও ইসরায়েলের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার যে উদ্যোগ নিচ্ছেন, তা তীব্র তর্কবিতর্ক দেখা যাচ্ছে৷ ইসরায়েল ও হামাস দুই পক্ষই এমন উদ্যোগের তীব্র বিরোধিতা করেছে৷ উল্লেখ্য, একাধিক অপরাধের দায়ে হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়ে, ইয়াহিয়া সিনোয়ার, হামাসের সামরিক শাখা কাসাম ব্রিগেডের কমান্ডার-ইন-চিফ মোহাম্মদ দিয়াব আল-মাসরির পাশাপাশি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টকে গ্রেপ্তার করতে চান খান৷
আইসিসি-র উদ্যোগকে ‘ঐতিহাসিক কলঙ্ক' হিসেবে বর্ণনা করেছে ইসরায়েল৷ প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু গণতান্ত্রিক ইসরায়েলের সঙ্গে হামাসের গণহত্যাকারীদের তুলনার বিরুদ্ধে কড়া সমালোচনা করেন৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও একই কারণ দেখিয়ে এমন উদ্যোগের তীব্র বিরোধিতা করেছেন৷ তিনি ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে কোনো তুলনার অবকাশ দেখছেন না৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক আদালতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার আনা গণহত্যার অভিযোগেরও তীব্র বিরোধিতা করেন৷ জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এমন তুলনার সমালোচনা করেছে৷ ফ্রান্স অবশ্য আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতের নিরপেক্ষতা ও স্বাধীনতার প্রতি আস্থা জানিয়েছে৷
আন্তর্জাতিক আঙিনায় আলোড়ন সত্ত্বেও ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযানচালিয়ে যাচ্ছে৷ রাফাহ শহরের পাশাপাশি গাজার মধ্য ও উত্তর অংশেও ইসরায়েলি সেনা তৎপরতা চলছে৷ এমন অবস্থায় বিশাল সংখ্যক ফিলিস্তিনি রাফাহ শহর ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে৷ জাতিসংঘের সূত্র অনুযায়ী আট লাখ ১২ হাজারেরও বেশি বাসিন্দা শহর ছেড়ে চলে গেছে৷ কিন্তু মিশর সীমান্তের কাছের সেই শহর ছেড়ে কোথায় নিরাপদ আশ্রয় পাওয়া সম্ভব, সে বিষয়ে চরম বিভ্রান্তি ও অনিশ্চয়তা কাজ করছে৷
হামাসের পরাজয় ও সব ইসরায়েলি পণবন্দির মুক্তি পর্যন্ত নেতানিয়াহু গাজায় সামরিক অভিযান চালিয়ে যাবার অঙ্গীকার করেছেন৷ প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্যালান্ট সোমবার বলেছেন, রাফাহ শহরে আরো বড় আকারে অভিযান চালানো হবে৷ তেল আভিভে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সালাইভানের সঙ্গে আলোচনার পর তিনি এ কথা জানান৷ গ্যালান্ট গাজায় মানবিক সাহায্য সংক্রান্ত পরিকল্পনাও তুলে ধরেন৷ রাফাহ শহরের বেসামরিক বাসিন্দাদের উদ্ধারের উদ্যোগ সম্পর্কেও তিনি বক্তব্য রাখেন৷ সালাইভান বলেন, ঘনবসতিপূর্ণ রাফাহ শহরে বড় আকারের সামরিক অভিযানের বিরোধিতা করছে মার্কিন প্রশাসন৷ তবে গাজায় হামাস নেতাদের অবস্থান চিহ্নিত করার উদ্যোগের প্রতি সহানুভূতি দেখান তিনি৷
আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতের কড়া অবস্থানের পাশাপাশি নিজের মন্ত্রিসভায় বিক্ষোভও সামলাতে হচ্ছে নেতানিয়াহুকে৷ প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্যালান্ট ছাড়াও যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার সদস্য বেনি গানৎসও গাজায় হামাসের রাজনৈতিক বিকল্প সৃষ্টির জন্য চাপ দিচ্ছেন৷ আগামী ৮ই জুনের মধ্যে নেতানিয়াহু যুদ্ধ-পরবর্তী গাজার জন্য কোনো রাজনৈতিক পরিকল্পনা পেশ না করলে গানৎস পদত্যাগের হুমকি দিয়েছেন৷
এসবি/কেএম (এএফপি, ডিপিএ)