আত্মরক্ষার কৌশল শিখবে স্কুলের ছেলেমেয়েরা
৯ সেপ্টেম্বর ২০১১মেক্সিকোর ড্রাগের লড়াই এতটাই ব্যাপক আকার নিয়েছে যে এখন বাচ্চাদেরও আত্মরক্ষার কৌশল শেখানোর কথা ভাবতে হচ্ছে৷
মেক্সিকোর আকাপুলকো প্রশান্ত মহাসাগরের তীরে অবকাশ কাটানোর এক নামি শহর৷ চলতি সপ্তাহেই সেখানকার স্কুলে স্কুলে এমন বোতাম বসানো হয়েছে যা টিপলেই পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ ঘটবে৷ সেখানকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঘিরে আকাশে এবং স্থলে চলেছে প্রহরা৷ বায়ান্নটি স্কুলের শিক্ষকরা তিনসপ্তাহ স্কুলে আসেননি৷ ভয় দেখিয়ে তোলা আদায়ের ঘটনার পর, শিক্ষকরা ক্লাস বর্জন করেন৷ তাদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টাতেই নিরাপত্তা বাহিনীর এই প্রহরা৷
এই তো সম্প্রতি সাতটি ছেলেমেয়ে নিয়ে মেক্সিকো সিটির একটি স্কুলবাস যাচ্ছিল৷ সাতবার গুলি চালানো হয় বাসটি লক্ষ্য করে৷ ড্রাইভার এবং বাচ্চাদের দেখাশোনা করার দায়িত্বে নিযুক্ত স্কুলকর্মী ছেলেমেয়েদের বাসের ভিতর সটান শুয়ে থাকার পরামর্শ দেয়৷ ঘটনার পরপরই তাদের নিয়ে যাওয়া হয় সাইকোলজিস্ট'এর কাছে৷
এই ঘটনার ফলে রাজধানীর কিছু স্কুলের বাসরুটগুলোর ওপর কড়া দৃষ্টি রাখছে পুলিশ৷ কোন কোন এলাকায় চোখে পড়বে হলুদ স্কুল বাসের পিছন পিছন চলেছে প্রাইভেট কার৷ ভিতরে দেহরক্ষীরা বসে আছে৷
সারা মেক্সিকো জুড়েই যে এরকম ঘটনা ঘটছে তা নয়৷ তবে সম্প্রতি বেশ কিছু ঘটনা মেক্সিকোর স্কুল পড়ুয়া ছেলেমেয়ে, বাবামা এবং শিক্ষকদের মনে ভয় ঢুকিয়ে দিয়েছে৷ অবস্থা এতটাই চরমে ওঠে যে প্রেসিডেন্ট ফেলিপে কালডেরনকে সাম্প্রতিক এক ভাষণে স্কুলের ছেলেমেয়েদের আশ্বস্ত করতে হয়৷
গত মাসে এমনকি ইন্টারনেট মারফত বিভিন্ন স্কুলে হামলা হবার মিথ্যা খবর ছড়িয়ে পড়লে বাবামারা সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন৷ নিজ নিজ সন্তানদের বাড়ি ফিরিয়ে আনতে স্কুলে ভীড় করেন৷ ফেসবুক আর টুইটারে এই গুজব ছড়ানোর অপরাধে একজন পুরুষ ও এক মহিলাকে জেলে আটক রাখা হয়েছে৷
গত মে মাসে মন্টেরেই শহরের এক স্কুল টিচার এক গোলাগুলির ঘটনার সময় ছেলেমেয়েদের মেঝের উপর শুয়ে থাকতে বলেন এবং শিশুদের প্রিয় এক চরিত্র নিয়ে জোরে জোরে গান করান সবাইকে দিয়ে, যাতে গুলির শব্দ চাপা পড়ে যায়৷ এই অভিজ্ঞতা তিনি ভিডিওতে ধারণ করে রাখেন৷ তা দেখানোর পর সারা দেশে তাঁকে নিয়ে হৈচৈ পড়ে যায়৷
স্কুলের পড়ুয়াদের জরুরি পরিস্থিতিতে আত্মরক্ষার কৌশল শেখানো, ভয়ভীতির মোকাবিলা করার জন্য তাদের মানসিকভাবে প্রস্তুতি করার চেষ্টা-যে মেক্সিকোতে বাড়বে, এতে কোন সন্দেহ নেই৷
প্রতিবেদন: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন