1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আতংকের আরেক নাম সুনামি

হাফসা হোসাইন১৪ নভেম্বর ২০০৮

মনে আছে, ২০০৪-এ এশিয়ান সুনামির কথা? সাগর তলে ভূমিকম্পের কারণে সৃষ্ট ওই সুনামিতে পানির কি তান্ডব লীলাই না চলেছিলো ১১টি দেশে! কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঢেউ গ্রাস করে নিয়েছিলো লাখ লাখ মানুষকে৷

https://p.dw.com/p/Fv4b
আতংকের আরেক নাম সুনামিছবি: dpa - Bildfunk

তাই সুনামির ভয়াবহতা থেকে বাঁচতে ইন্দোনেশিয়ায় চালু করা হয়েছে নতুন ধরনের সুনামির পূর্ব সতর্কীকরণ ব্যবস্থা৷ জার্মান প্রযুক্তিতে গড়ে তোলা ওই ব্যবস্থায় সাগরের তলদেশে ভূমিকম্প হওয়ার পাঁচ মিনিটের মধ্যেই সুনামির আশংকা সম্পর্কে লোকজনকে জানানো সম্ভব হবে৷

Tsunami Frühwarnsystem Pazifischer Ozean Boje
নতুন ধরনের সুনামির পূর্ব সতর্কীকরণ ব্যবস্থাছবি: AP

সমুদ্রের পানি স্থানচ্যুত হলে যে ঢেউয়ের সৃষ্টি হয় তাই সুনামি৷ সাগর তলে ভূমিকম্প, আগ্নেয়গিরির অগ্নুত্পাত, পরমাণু বোমার পরীক্ষার মতো বড় ধরনের বিস্ফোরণ, ভূমিধস কিংবা গ্রহাণুপুঞ্জের ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ার কারণে সাধারণত সুনামি হয়ে থাকে৷ এমনকি সাগরতল ছাড়াও এমনিতেই ভূমিকম্প বা ভূঅভ্যন্তরে ব্যাপক আলোড়নের কারণেও হতে পারে সুনামি৷ তবে সাগর তলে সুনামি হলেও সব সময়ই তা উপকূল পর্যন্ত পৌঁছায় না৷ আবার কখনোবা ধ্বংসাত্মক রূপ নেয় সুনামি৷ উপকূলে হাজার হাজার মাইলজুড়ে চলে ধ্বংসলীলা৷ যেমনটা হয়েছিলো ২০০৪ সালে সাগরতলে ভূমিকম্পে সৃষ্ট সুনামিতে৷

স্মরণকালের ভয়াবহতম ওই সুনামিতে সাগরের পানি ১০০ ফুট পর্যন্ত ফুঁসে ওঠে আছড়ে পড়ে ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড ভারতসহ ১১টি দেশে৷ এমনকি ভারত মহাসাগর ছাড়িয়ে সুনামি পৌঁছায় আটলান্টিকের পাড়ে আলাস্কা উপকূলেও৷ ওই সুনামিতে ২ লাখ ৩০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়৷ এর মধ্যে কেবল ইন্দোনেশিয়ার আচে প্রদেশেই মারা যায় ১ লাখ ৭০ হাজার মানুষ৷

Deutsches Tsunamiwarnsystem startet in Indonesien
সুনামির আগাম তথ্য জানাতে নতুন প্রযুক্তিছবি: picture-alliance/dpa

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভুমিকম্পের পর পরই সুনামির ব্যাপারে যদি উপকূলীয় এলাকায় সতর্কতা জারি করা যেতো তাহলে হয়তো প্রাণহানি অনেক কম হতো৷ কারণ ভূমিকম্পের প্রায় দেড় ঘন্টা পর ইন্দোনেশিয়ায় প্রথম আঘাত হানে সুনামি৷ ভূতাত্ত্বিক গঠনের কারণে ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্প, সুনামি, আগ্নেয়গিরির উদগীরণের মতো ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি বেশি৷

ভয়াবহ সুনামির ৪ বছর পর সম্প্রতি অত্যাধুনিক সুনামি সতর্কীকরণ প্রযুক্তির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হলো ইন্দোনেশিয়ায়৷ জিআইটিইডব্লিউএস প্রকল্পে সাড়ে ৪ কোটি ইউরো সহায়তা দিয়েছে জার্মান সরকার৷ এছাড়া চীন, জাপান, ফ্রান্স এবং যুক্তরাষ্ট্রও সহায়তা করেছে এই প্রকল্পে৷ বর্তমানে অপারেশনাল পর্যায়ে রয়েছে নতুন এই সতর্কীকরণ ব্যবস্থা৷ ২০১০ সাল নাগাদ এর কাজ পুরোপুরি শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে৷ এই ব্যবস্থায় পানির চাপ পর্যবেক্ষণের জন্য ১০০টি সিসমোমিটার এবং গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম বা জিএনএস প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রশান্ত মহাসাগরের তলদেশে বসানো হয়েছে ২০টি স্টেশন৷ এছাড়া বড় আকারের ইস্পাতের ১০টি বয়া থাকছে সমুদ্র পৃষ্ঠে৷ ভূমিকম্প হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পানির চাপ ও আলোড়ন সম্পর্কে স্টেশন থেকে খবর পাঠিয়ে দেয়া হবে বয়াতে৷ বয়াগুলো স্যাটেলাইটের মাধ্যমে তথ্য পাঠিয়ে দেবে জাকার্তার সুনামি সতর্কীকরণ কেন্দ্রে৷ আর তারই ভিত্তিতে জারি করা হবে সুনামি সতর্কতা৷ পুরো প্রক্রিয়ায় সময় লাগবে মাত্র ৫ মিনিট৷ গত বছর সেপ্টেম্বরে সাগর তলে ভূমিকম্প হওয়ার পর মিনিট কয়েকের মধ্যেই সফলভাবে সুনামি সতর্কতা জারি করে এই প্রযুক্তি৷