আজারবাইজানের গ্যাঞ্জায় আর্মেনিয়ার হামলা
৫ অক্টোবর ২০২০আরো তীব্র হয়েছে লড়াই। প্রাণ যাচ্ছে সাধারণ মানুষের। আজারবাইজান এবং আর্মেনিয়ার লড়াইয়ে ধ্বংস হচ্ছে একের পর এক শহর। রেডক্রস থেকে জাতিসংঘ, সকলেই অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধের আবেদন জানালেও, আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের সরকার কোনো ভাবেই তাতে রাজি নয়।
রোববার আজারবাইজানের প্রশাসন জানিয়েছে, ককেশাস পর্বতের দক্ষিণে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর গ্যাঞ্জা আর্মেনিয়ার শেলিংয়ে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এই নিয়ে আজারবাইজানের দ্বিতীয় শহর আর্মেনিয়ার বোমা ও গোলাবর্ষণে বিধ্বস্ত হলো।
বস্তুত, শনিবার থেকে দুই দেশই দূরপাল্লার কামান ব্যবহার করতে শুরু করেছে। বিভিন্ন শহর লক্ষ্য করে কামান দাগা হচ্ছে। সাধারণ মানুষের কথা ভাবাও হচ্ছে না বলে অভিযেোগ। প্রাথমিক ভাবে গ্যাঞ্জা ধ্বংসের কথা অস্বীকার করেছিল আর্মেনিয়া। দেশের প্রশাসন জানিয়েছিল, কোনো ভাবেই সাধারণ মানুষকে লক্ষ্য করে আক্রমণ চালানো হচ্ছে না। কিন্তু পরে আর্মেনিয়ার সেনার সাহায্যপ্রাপ্ত নাগর্নো-কারাবাখের বিচ্ছিন্নতাবাদী সেনা জানায়, গ্যাঞ্জায় আজারবাইজানের সেনা ছাউনি লক্ষ্য করে কামান দাগা হয়েছিল।
আজারবাইজান জানিয়েছে, সেই শেলিংয়েই বহু সাধারণ মানুষের বাড়ি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে। গ্যাঞ্জায় প্রায় তিন লাখ ৩০ হাজার মানুষের বসবাস। তাঁদের এক বড় অংশ এখন গৃহহীন।
রোববারে ঘটনার পর জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছে আজারবাইজানের প্রধানমন্ত্রী। আর্মেনিয়া কী ভাবে সাধারণ মানুষকে আক্রমণ করছে, সে কথা জানিয়ে তিনি বলেছেন, বিতর্কিত নাগর্নো-কারাবাখের দখল না নেওয়া পর্যন্ত লড়াই বন্ধ হবে না। সাধারণ মানুষকেও নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
আজারবাইজানের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করেছে আর্মেনিয়া। তাদের বক্তব্য, নাগর্নো-কারাবাখের দুইটি শহর কামান দেগে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে আজারবাইজানের সেনা। সেখানেও বহু সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আজারবাইজান অবশ্য জানিয়েছে, কেবলমাত্র আর্মেনিয়ার সেনা ঘাঁটি লক্ষ্য করেই আক্রমণ চালানো হচ্ছে।
যে ভাবে দুই দেশের লড়াইয়ে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে রেডক্রস। তারা জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক যুদ্ধের নিয়মও মানছে না দুই দেশ। ফলে হাজার হাজার সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। আন্তর্জাতিক মঞ্চ প্রায় প্রতিদিনই দুই দেশকে লড়াই থামিয়ে আলোচনার টেবিলে বসার অনুরোধ করছে। কিন্তু আপাতত আলোচনায় বসার কোনও ইঙ্গিত দেয়নি দুই দেশের সরকার।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি)