আখ থেকে তৈরি প্লাস্টিকের বোতল
১৭ ডিসেম্বর ২০১৭সারা বিশ্বে প্রতি মিনিটে দশ লাখ প্লাস্টিকের বোতল কেনা হয়৷ এমনকি জার্মানির মতো পরিবেশ বান্ধব দেশেও ক্রমে আরো বেশি মানুষ একবার ব্যবহার করে ফেলে দেওয়ার মতো প্লাস্টিকের বোতলের দিকে ঝুঁকছেন৷
অথচ প্লাস্টিকের বোতল তৈরিতে বিপুল পরিমাণ জ্বালানি ও অপরাপর সম্পদ খরচ হয়৷ এক জার্মানিতেই প্লাস্টিকের বোতল তৈরিতে লাগে বছরে ৬৬৫,০০০ টন খনিজ তেল ও ১,১০০ কোটি কিলোওয়াট/ঘণ্টা বিদ্যুৎ – যা থেকে বছরে সাড়ে বারো লাখ টন কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গত হয় (পরিবেশ সংগঠন ডিইউএইচ-এর পরিসংখ্যান)৷
অধিকাংশ প্লাস্টিকের বোতলই রিসাইকল করা সম্ভব, কিন্তু অধিকাংশ দেশের তা করার মতো পর্যাপ্ত অবকাঠামো নেই৷ ফলে বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক নদী বেয়ে সমুদ্রসৈকত ও সাগরে গিয়ে পড়ছে ও প্লাস্টিক বায়োডিগ্রেডেবল নয় বলে, সেখানে জমা হচ্ছে৷ এমনকি সাগরের মাছের মাধ্যমে তা মানুষের খাদ্যেও প্রবেশ করছে ও স্বাস্থ্যের বিপদ ঘটাচ্ছে৷
ফরাসি শিল্পপতি ও প্যাকেজিং ডিজাইনার নিকোলা মুফলে বহু বছর ধরে বড় বড় কোম্পানির জন্য প্লাস্টিকের বোতল তৈরি করেছেন৷ এবার তিনি একটি ‘‘ভেজান'' বা পুরোপুরি নিরামিষ বা ‘নির্প্লাস্টিক' বোতল বিকাশের কাজে মন দিয়েছেন৷ পেট্রোকেমিক্যাল থেকে তৈরি প্লাস্টিকের তুলনায় মুফলে-র কোম্পানির সৃষ্ট এই বোতল নাকি শতকরা ১০০ ভাগ বায়োডিগ্রেডেবল, বলে তাদের দাবি৷
‘এখো' বোতল?
আখ থেকে তৈরি বোতলগুলি বাজারে ছাড়া হয় বছর দেড়েক আগে৷ প্রধানত ফলের রসের দোকান অথবা জড়িবুটি কিংবা প্রসাধনদ্রব্যের বিক্রেতারা এই ‘নিরামিষ' বোতল ব্যবহার করে থাকেন৷ এই ‘বায়োপ্লাস্টিক' নাকি একবার মুক্ত প্রকৃতিতে গিয়ে পড়লে এক থেকে দু'বছরের মধ্যেই অন্তর্হিত হয়৷
একটা মুশকিল থেকে যাচ্ছে: মুফলের কোম্পানি লিসপ্যাকেজিং-এর বোতলগুলো দেখতে ঠিক প্লাস্টিকের বোতলের মতো – সাদা এবং স্বচ্ছ – কাজেই গ্রাহকরা বুঝবেন কী করে যে এগুলো পরিবেশ বান্ধব এখো প্লাস্টিক থেকে তৈরি? তাই অলিভের বিচি গুঁড়িয়ে এখো প্লাস্টিকে রং ধরানোর কাজ চলেছে৷
লিসপ্যাকেজিং কোম্পানি চলতি বছর শেষ হবার আগে সাত লাখ বায়োডিগ্রেডেবল বোতল তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে৷ শুধু বোতলই নয়, অন্যান্য প্লাস্টিক পণ্যের ক্ষেত্রেও নিরামিষ ‘এখো' প্লাস্টিকের ব্যবহার দেখতে চান মুফলে – বিশেষ করে ফ্রান্স যখন সাধারণভাবে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানোর চেষ্টা চালাছে৷
২০১৬ সালে ফ্রান্স ঘোষণা করে যে, ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের প্লেট বা কাপ-ডিশ ও কাঁটাচামচ আগামীতে নিষিদ্ধ করা হবে ও তার পরিবর্তে কাপড় কিংবা মাড় থেকে তৈরি পণ্য ব্যবহার করা হবে, যা পচিয়ে সার করা সম্ভব৷ লিসপ্যাকেজিং-এর এখো প্লাস্টিক এক্ষেত্রে তার অবদান রাখার আশা করছে৷
জেনিফার কলিন্স/এসি
প্রতিবেদনটি কেমন লাগলো? জানান আমাদের, লিখুন নীচের ঘরে৷