আইএস-দমন অভিযান!
৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫প্রতিরক্ষামন্ত্রী মাইকেল ফ্যালন ইতিমধ্যেই স্বীকার করেছেন যে, তাঁর সরকারের কাছে ইসলামি জঙ্গিদের এক তালিকা রয়েছে, যাদের উপর হামলার পরিকল্পনা রয়েছে৷ তালিকায় সেই সব চরমপন্থিদের নাম রয়েছে, যারা শয়ে শয়ে ব্রিটেন ছেড়ে সিরিয়া ও ইরাকে তথাকথিত ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এ যোগ দিতে গেছে৷ তাদের একজনের নাম ‘জিহাদি জন'৷ ব্রিটেনের নাগরিক এই জঙ্গি প্রকাশ্যে আইএস-এর হাতে বন্দিদের শিরশ্ছেদ করেছে এবং নৃশংস ও ক্ষমার অযোগ্য সেই অপরাধের ভিডিও ইন্টারনেটে প্রকাশ করেছে৷
এখন প্রশ্ন হলো, এর কোনো বিকল্প রয়েছে কি? কোনো প্রধানমন্ত্রী কি নিরাপত্তা সংস্থাগুলির প্রধানদের পরামর্শ উপেক্ষা করতে পারেন? তিনি কি নিজের দেশে সন্ত্রাসী হামলার ঝুঁকি নিতে পারেন? উত্তরটা অবশ্যই ‘না'৷ আমরা সবাই জানি, আইএস কী ভয়ংকর হতে পারে৷ আমরা জানি, তারা আমাদের ধ্বংস করে দিতে চায়৷ কোনো নেতার পক্ষে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া অত্যন্ত কঠিন৷ এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই৷ সম্ভাব্য হুমকির মুখে এমন হামলা আইনত সম্পূর্ণ বৈধ – এটাই সরকারের অবস্থান৷
অন্যদিকে আইএস-এর নৃশংসতা ও বিকৃতি আমাদের বিচারবুদ্ধির উপর কালো ছায়া ফেলুক এবং আমরাও ভাবনাচিন্তা না করেই প্রতিক্রিয়া দেখাই – এমনটাও কাম্য হতে পারে না৷ ব্রিটেনের বিরোধী লেবার পার্টি সরকারের আচরণ ও আইনি পরিস্থিতি সম্পর্কে যে স্পষ্টতা দাবি করেছে, তা সম্পূর্ণ ঠিক৷ একমাত্র ক্ষমতাকেন্দ্রে হাতে গোনা কিছু মানুষের হাতে থাকা গোপন প্রমাণের ভিত্তিতে যদি দিনের পর দিন এভাবে আকাশ থেকে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়, সেক্ষেত্রে অত্যন্ত বিপজ্জনক এক প্রবণতা সৃষ্টি হবে৷ তখন ‘বিগ ব্রাদার'-এর খবরদারির ধারণা আরও বাস্তব হয়ে পড়বে৷
তথাকথিত জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিবেচনার আড়ালে না থেকে ব্রিটেনের সরকারের উচিত সেই সব তথ্য প্রকাশ্যে আনা, যার ভিত্তিতে তারা এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে৷ অনেক সংসদীয় কমিটি গোপনীয়তার বেড়াজালের মধ্যে জাতীয় নিরাপত্তার বিষয় চর্চা করে৷ অন্তত সেই সব সংসদ সদস্যদের এমন সিদ্ধান্ত আগেভাগেই পরীক্ষা করার ক্ষমতা থাকা উচিত৷ একমাত্র এভাবেই মানুষ নিশ্চিত হতে পারে, যে সরকার নাগরিক অধিকার খর্ব করছে না৷ ইসলামিক স্টেট-এর বিরুদ্ধে সংগ্রাম আমাদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ক্ষতি করুক – সেটা আমরা হতে দিতে পারি না৷