সাইবার হামলা করছে উত্তর কোরিয়া
৬ আগস্ট ২০১৯দেশটির সাইরবার হামলাগুলো এতটাই সুপরিকল্পিত, তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণই মিলছে না৷ জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ এমন তথ্য দিয়েছে৷
গত ছয় মাস ধরে পিয়ংইয়ংয়ের ওপর আরোপ করা আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞাগুলো পর্যবেক্ষণ করে প্রতিবেদন তৈরি করেছেন বিশেষজ্ঞরা৷ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর কোরিয়া ‘বড় আকারে এবং বুদ্ধিমত্তার' সঙ্গে সাইবার হামলা চালাচ্ছে৷ এখন পর্যন্ত দেশটি দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে বলেও দাবি করেছেন বিশেষজ্ঞরা৷
বিভিন্ন আর্থিক ও ক্রিপ্টোকারেন্সি বিনিময় প্রতিষ্ঠান থেকে এই অর্থ চুরি করা হয়েছে বলেও উল্লেখ রয়েছে প্রতিবেদনে৷ বলা হচ্ছে, ১৭টি দেশে অন্তত ৩৫টি হামলা চালিয়েছে তারা, যা এখন খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷ সরকারি তদারকি কম এবং ব্যাংকিং খাতের ঢিলেঢালা নিয়ন্ত্রণ থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাছাই করে হামলা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া, যাতে কেউ তাঁদের শনাক্ত করতে না পারে৷
জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার কারণে প্রচলিত রাজস্ব উৎস থেকে বঞ্চিত দেশটি৷ এছাড়া কয়লা, লোহা, সিসা, টেক্সটাইল এবং সামুদ্রিক খাদ্য রপ্তানিও নিষিদ্ধ রয়েছে দেশটির৷
‘অবমূল্যায়ন' করা যাবে না
সোমবার ওয়াশিংটনভিত্তিক উত্তর কোরিয়ার থিঙ্কট্যাংক ‘৩৮ নর্থ' তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়া সরকারের সাইবার হামলার সক্ষমতাকে অবমূল্যায়ন করা উচিত হবে না৷ প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, সাইবার হামলাগুলোর তথ্য-উপাত্ত খুঁজে বের করাটাও মুশকিল হবে৷
হ্যাকিংয়ের পেছনে কারা?
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশকিছু সাইবার হামলার জন্য উত্তর কোরিয়ার হ্যাকার গ্রুপ ‘লাজারুস'-এর দিকে আঙুল তুলছেন বিশেষজ্ঞরা৷ ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে লাজারুসের সঙ্গে সম্পৃক্ত এক ‘হাই-প্রোফাইল' হ্যাকার নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে খোলা বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার চুরি করে৷
পরের বছর তাইওয়ানের ফার ইস্টার্ন ব্যাংকের কম্পিউটার সিস্টেমে মেলওয়্যার পাঠিয়ে ৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার চুরি করে লাজারুসের আরেক হ্যাকার৷ এর আগে ২০১৪ সালে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সনির সিস্টেম হ্যাক করে তাদের সার্ভারের সব ডেটা মুছে দিয়েছেল লাজারুস চক্র৷ তাতে ক্ষতি হয়েছিল অন্তত ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার৷
সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের আন্তর্জাতিক সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ জেমস লুইস বলেন, ‘‘কিম পরিবারের ব্যয়বহুল অস্ত্র পরীক্ষা আর দেশের অস্ত্রের মজুদ বাড়াতে অপরাধকে উৎসাহিত করছে উত্তর কোরিয়া৷ দেশটি এখন রাষ্ট্র পরিচালিত সাইবার সন্ত্রাসীর কারখানায় পরিণত হয়েছে৷''
ওয়েসলি রান/টিএম