ভারত-পাক ফ্ল্যাগ মিটিং
১৪ জানুয়ারি ২০১৩সোমবার দুপুরে কাশ্মীরের পুঞ্চ সেক্টরের নিয়ন্ত্রণরেখায় বসে ভারত ও পাকিস্তানের ব্রিগেডিয়ার স্তরে ফ্ল্যাগ বা পতাকা মিটিং৷ গত সপ্তাহে অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘন করে দু'পক্ষের গুলি বিনিময়ে নিহত হয় চারজন৷ নিহত একজন ভারতীয় সেনার লাশ বিকৃত করার অভিযোগ তোলে ভারত৷ অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘন কে প্রথমে করেছিল, এই নিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে এবং উভয়পক্ষ সেই অভিযোগ যথারীতি অস্বীকার করে৷
ফ্ল্যাগ মিটিং শুরু হবার কয়েক ঘণ্টা আগে দিল্লিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল বিক্রম সিং এক সাংবাদিক বৈঠকে কড়া ভাষায় পাকিস্তানকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘‘আমরা অস্ত্রবিরতি মেনে চলবো যদি অপরপক্ষ তা মেনে চলে৷ তবে যদি প্ররোচনা আসে, তাহলে চুপ থাকবো না৷ পাল্টা জবাব দেব৷'' আর পাকিস্তানের অভিযোগ, প্ররোচনা আসে ভারতের দিক থেকে নিয়ন্ত্রণরেখায় নতুন পর্যবেক্ষণ চৌকি বসানো নিয়ে৷
এই নিয়ে উত্তেজনা বাড়তে থাকার প্রেক্ষাপটে আধ ঘণ্টার এই ফ্ল্যাগ মিটিং-এ চেষ্টা করা হয় উত্তেজনা প্রশমনের৷ দিল্লি ও ইসলামাবাদ নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে প্রতিবাদপত্র বিনিময় করে৷ ২০০৩ সালে অস্ত্রবিরতি চুক্তি অনুসারে মত পার্থক্য দূর করার ‘মেকানিজম'-কে কাজে লাগানোর কথা বলা হয়৷ জোর দেয়া হয় স্থানীয় কমান্ডার স্তরে ‘হট লাইন'-এর মাধ্যমে যোগাযোগ বাড়ানোর ওপর৷
নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ভারত-পাকিস্তান গুলি বিনিময় মাঝে মধ্যেই হয় এবং সেই নিয়ে দেখা দেয় সাময়িক উত্তেজনা৷ কোনো কোনো বিশ্লেষক নিয়ন্ত্রণরেখাকে বাহিনীমুক্ত রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকেন৷ স্ট্র্যাটিজিক বিশ্লেষক ইন্দ্রনীল বন্দোপাধ্যায় বলেন, ভারত তা মেনে নেবে না৷ পুঞ্চ এলাকা বিশ্বের সবথেকে বেশি মিলিটারাইজড অঞ্চল৷ এর সামরিক গুরুত্ব এতটাই বেশি যে, ঐ অঞ্চল কব্জা করতে পারলে পুরো কাশ্মীরকেই বিচ্ছিন্ন করা সহজ হবে৷ অতীতে যেমনটা হয়েছিল সিয়াচেনের ক্ষেত্রে৷ সে সময় ঐ এলাকা বাহিনীমুক্ত থাকায় পাকিস্তান সেখানে ঢুকে পড়েছিল৷ তাই পাকিস্তান সিয়াচেন বাহিনীমুক্ত করার প্রস্তাব দিলে ভারত এই মর্মে লিখিত আশ্বাস দাবি করে যে, বাহিনীমুক্ত হলে পাকিস্তান সেখানে ঢুকবে না৷ পাকিস্তান তাতে আপত্তি করে এই যুক্তিতে যে, ওটা বিতর্কিত এলাকা৷