অস্তিত্বের লড়াইয়ে সরকারের সাহায্য পাচ্ছে লুফটহানসা
২৬ মে ২০২০অন্যান্য অনেক ছোট-বড় কোম্পানির মতো করোনা সংকটে বিপর্যস্ত জার্মানির বিমান সংস্থা লুফটহানসা৷ বিমান চলাচল প্রায় স্তব্ধ হয়ে যাওয়ার ফলেবিশাল অঙ্কের লোকসানের মুখ দেখতে হচ্ছে৷ পরিস্থিতির উন্নতির কোনো সম্ভাবনাও আপাতত দেখা যাচ্ছে না৷ অস্তিত্বের সংকট দেখা দেওয়ায় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলো জার্মানির ফেডারেল সরকার৷ কয়েক সপ্তাহ ধরে আলোচনার পর ৯০০ কোটি ইউরো বিনিয়োগ করে এবং ২০ শতাংশ মালিকানার অংশীদার হয়ে এ যাত্রায় জার্মানির সবচেয়ে বড় বিমান সংস্থাকে রক্ষা করতে এগিয়ে এলো আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সরকার৷ তবে শর্ত হিসেবে ভবিষ্যতে শেয়ারের মালিকদের জন্য ডিভিডেন্ড বন্ধ রাখতে হবে৷ ম্যানেজারদের বেতন ও ভাতা বাড়ানোও চলবে না৷ পরিচালকমণ্ডলীতে সরকারের দুই প্রতিনিধি থাকবেন৷
জার্মানির সরকার এক ঢিলে অনেকগুলি পাখি মারতে পারতে চায় বলা চলে৷ দেশের প্রধান বিমান সংস্থার সুরক্ষার পাশাপাশি বিশাল সংখ্যার মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে পারে এই সিদ্ধান্ত৷ তাছাড়া সরকারি অংশিদারিত্বের ফলে অন্য কোনো সংস্থা দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে লুফটহানসা অধিগ্রহণ করতে পারবে না৷ এমন প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে সরকার আরও পাঁচ শতাংশ শেয়ার কিনে ভেটো প্রয়োগ করতে পারবে৷ এই সংস্থাকে আরও সাহায্য করতে জার্মান পুনর্গঠন ব্যাংক এবং কিছু বেসরকারি ব্যাংক তিন বছরের জন্য আরও ৩০০ কোটি ইউরো অঙ্কের ঋণ দিচ্ছে৷
এককালে ডাক কোম্পানি, টেলিকম ও লুফটহানসার মতো কোম্পানি সরকারি মালিকানায় চলতো৷ তারপর বেসরকারিকরণ প্রক্রিয়ার আওতায় এমন সব কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা বেসরকারি হাতে চলে যায়৷ তা সত্ত্বেও সরকার আংশিক মালিকানা ছাড়ে নি৷ করোনা সংকটের কারণে জরুরি পরিস্থিতিতে সরকার সহায়তা প্যাকেজের অংশ হিসেবে প্রয়োজনে বেসরকারি সংস্থার আংশিক মালিকানার সুযোগ রেখেছে৷ উল্লেখ্য, এর আগে আন্তর্জাতিক আর্থিক সংকটের সময়ও জার্মানির সরকার কম্যার্ৎসবাংক কোম্পানির ১৫ শতাংশ অংশিদারিত্ব নিয়ে নেয়৷
জার্মানির অর্থ ও অর্থনীতি মন্ত্রণালয় সোমবার জানিয়েছে, যে সংস্থা হিসেবে লুফটহানসা বেশ লাভজনক এবং অনুকূল পরিস্থিতির মধ্যে ছিল৷ কিন্তু মহামারির কারণে এই বিমান সংস্থা সমস্যায় পড়েছে৷ অর্থমন্ত্রী ওলাফ শলৎস সীমিত সময়ের জন্য এমন প্রস্তুতির পক্ষে সওয়াল করেছেন৷ তিনি মনে করিয়ে দেন, যে সরকার ২০২৩ সালের শেষের মধ্যে নিজস্ব শেয়ার বিক্রি করার পরিকল্পনা নিয়েছে৷ লুফটহানসা আবার নিজের পায়ে দাঁড়ালে সরকার সম্ভবত সামান্য মুনাফাসহ শেয়ার বিক্রি করে আরও অনেক প্রয়োজন মেটাতে সেই অর্থ বিনিয়োগ করবে, বলেন শলৎস৷
জার্মান সরকারের এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনুমোদনের প্রয়োজন রয়েছে৷ প্রতিযোগিতার বাজারে সব সংস্থার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে ইইউ এমন সরকারি সাহায্য সম্পর্কে নীতিগতভাবে সন্দিহান থাকে৷ তবে জার্মানির সরকারের আশা, বর্তমান পরিস্থিতির আলোকে ব্রাসেলস কোনো আপত্তি জানাবে না৷
এসবি/কেএম (রয়টার্স, ডিপিএ)