অরিগামি থেকে শিল্পকর্ম
২ জুন ২০১৭অরিগামি শিল্পী সিপো মাবোনা গত আট বছর ধরে কাগজ ভাঁজ করে আসছেন – পেশা হিসেবে, সুইজারল্যান্ডের লুসার্ন শহরে তাঁর ছোট্ট স্টুডিওটিতে৷ মাবেনা জানালেন, ‘‘যদি আমার ঠিক মনে থাকে, তাহলে আমার যখন পাঁচ বছর বয়স, তখন আমার মা আমাকে কাগজ মুড়ে কাগজের প্লেন তৈরি করতে শিখিয়েছিলেন৷ তখন থেকেই আমার অরিগামির নেশা৷’’
আজ তাঁর শিল্পকর্ম মিউজিয়ামে রাখা থাকে; যেমন আমস্টারডামের ট্রপিক্যাল মিউজিয়ামের জন্য ২১টি সুবিশাল কাগজের পাখি তৈরি করেছেন মাবোনা৷
অতিকায় আকারের অরিগামি যে সম্ভব, ৩৭ বছর বয়সি মাবোনা তা প্রমাণ করেছেন একটি কাগজের হাতিটি তৈরি করে – শুধু একটি বড় কাগজের পাত ভাঁজ করে তৈরি হাতি; কাগজের মাপ: ১৫ বাই ১৫ মিটার, যুক্তরাষ্ট্রে স্পেশাল অর্ডার দিয়ে তৈরি করাতে হয়েছে, দাম পড়েছে প্রায় ১০,০০০ ইউরো৷ মাবোনা আর তাঁর তিন সহকর্মী এক মাস ধরে পরিশ্রম করে এই হাতিটি ‘ভাঁজ’ করেছেন৷
মাবোনা জানালেন, ‘‘আমার একটা ধারণা ছিল, একটা চারকোনা কাগজ মুড়ে যে কী করা যায়, তার কোনো সীমা নেই৷ এখন আমি যেরকম বড় কাগজ নিয়ে কাজ করি, তাতে কাগজ কতটা পুরু সেই অনুযায়ী সম্পূর্ণ অন্য ধরনের স্থিতি সৃষ্টি হয়; কাজেই মোড়ার প্রক্রিয়াটা সম্পূর্ণ অন্য রকমের হয়৷’’
কাগজ ছোট হোক বা বড়, শুরুতে পরিস্থিতি সব ক্ষেত্রেই এক: একটা ধারণা আর এক টুকরো কাগজ৷ মাবোনা বলেন, ‘‘নীতিগতভাবে আমি ভাবি, জীবটির শরীরের কোন অংশ কাগজের কোনখানে থাকবে৷ যেমন কাগজটা চারকোনা হলে আমি প্রথমে ভাবি, হাতির লেজটা এখানে রাখব আর দু'টো পা এখানে থাকবে৷ এখানে শরীরটা, হয়ত শুঁড়টা এই মাঝখানে আর কান দু’টো এখানে৷’’
সিপো মাবোনার অরিগামি শিল্পকর্মের কদর বিশ্ব জুড়ে৷ জাপানের এক স্পোর্টস শু নির্মাতার বিজ্ঞাপনে তাঁর কাজ দেখা যায়, অথবা একটি ইলেকট্রনিক কোম্পানির বিজ্ঞাপনে৷ হামবুর্গের একটি বিজ্ঞাপন সংস্থার জন্য মাবোনা কাগজ দিয়ে একটি আস্ত আবাসিক এলাকা তৈরি করেছিলেন৷ সিঙ্গাপুরের একটি হোটেলের জন্য তিনি কাগজের কই মাছ তৈরি করেছেন৷
একটি কাগজের প্লেন দিয়ে ছেলেবেলায় যা শুরু হয়েছিল, সিপো মাবোনার জীবনে আজ তা পেশায় পরিণত হয়েছে: এক টুকরো কাগজ থেকে শিল্প সৃষ্টি করা৷
আনা ফাইস্ট/এসি