অভিশংসনে কী বললেন ডেমোক্র্যাটরা
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রস্তাব নিয়ে ডেমোক্র্যাটদের অভিযোগ হলো, ট্রাম্প প্রথমে ভোট জালিয়াতি নিয়ে সুর চড়িয়েছিলেন। তাঁর ওই অভিযোগ ছিল পুরোপুরি মিথ্যা। তারপর তিনি ক্যাপিটলে যাওয়ার জন্য সমর্থকদের উসকেছেন। ভোট জালিয়াতির কথা শুনে সমর্থকরা উত্তেজিত ছিলেনই। তার সঙ্গে যোগ হয়েছিল উসকানি। তার ফলে ক্যাপিটল-কাণ্ড হয়েছিল।
ট্রাম্পের অ্যাটর্নি ও ইমপিচমেন্ট ম্যানেজাররা এবার ১৬ ঘণ্টা সময় পাবেন, তাঁদের কথা বলার জন্য। দুই দিন ধরে তাঁরা ট্রাম্পের সমর্থনে যাবতীয় যুক্তি দেবেন।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে একটাই অভিযোগ, তিনি তাঁর সমর্থকদের উসকানি দিয়েছিলেন, তার ফলে ক্যাপিটলের ঘটনা ঘটেছে।
'প্রধান উসকানিদাতা'
বিতর্কের সূচনা করে ডেমোক্র্যাট সদস্য জেমি রাসকিন বলেন, ট্রাম্পের এই বিচার হলো অ্যামেরিকার ক্ষেত্রে 'সত্য প্রতিষ্ঠার মুহূর্ত'। ট্রাম্পের অ্যাটর্নিদের দাবি ছিল, সাবেক প্রেসিডেন্ট কোনোভাবে সমর্থকদের উসকানি দেননি। কিন্তু রাসকিন বলেন, তথ্যপ্রমাণ দেখিয়ে দেবে, এই ঘটনায় ট্রাম্পের ভূমিকা কী ছিল। তিনি 'কম্যান্ডার ইন চিফ'-এর বদলে 'ইনসাইটার ইন চিফ' বা প্রধান উসকানিদাতায় পরিণত হয়েছিলেন।
রাসকিন ট্রাম্পের একের পর এক টুইট উদ্ধৃত করে দেখানোর চেষ্টা করেন, ট্রাম্পের অ্যাটর্নিরা যা বলছেন, তা ঠিক নয়। একটি টুইটে বলা হয়েছিল, 'বি দেয়ার, উইল বি ওয়াইল্ড'। তাঁর দাবি, এসবই দেখিয়ে দিচ্ছে, ক্যাপিটল-কাণ্ডে ট্রাম্পের ভূমিকা কতখানি ছিল।
এবার কী হবে
ডেমোক্র্যাট সদস্য জো নেগুসে জানিয়েছেন, তাঁর দলের যে সদস্যরা ইমপিচমেন্ট-ভাষণ দেবেন, তাঁরা এটা দেখাতে পারবেন যে, ট্রাম্পের উসকানির ফলেই তাঁর সমর্থকরা ক্যাপিটলে তাণ্ডব করেছিলেন। বারবার জালিয়াতির কথা বলে, ট্রাম্প আগে থেকেই তাঁদের উত্তেজিত করে রেখেছিলেন।
ভার্জিনিয়ার ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধি স্ট্র্যাসি প্ল্যাসকেট জানিয়েছেন, ট্রাম্প আগে থেকেই সব বুঝতে পেরেছিলেন। তারপরেও তিনি ইচ্ছে করে উসকানি দিয়েছিলেন। তিনি সহিংসতার আবহ তৈরি করে দিয়েছিলেন। তারপর তার সমর্থকরা সহিংস হয়েছে।
ক্যামেরায় কী ধরা পড়েছে
ক্যাপিটল-তাণ্ডবের দিন সিকিউরিটি ক্যামেরায় ধরা পড়া ফুটেজও প্রকাশ করেছেন প্ল্যাসকেট। সেখানে দেখা যাচ্ছে, প্রাউড বয়জের বেশ কিছু সদস্য ক্যাপিটলে ঢুকে জানলার কাচ ভাঙছে। তারপর তারা করিডোরে ঢুকছে। তারা রক্ষীদের হঠিয়ে দিচ্ছে। ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স এবং অন্যদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আর দাঙ্গাকারীরা চিৎকার করছে, 'মাইক পেন্সকে মার', 'ন্যান্সি পেলোসি সহ যাকে হাতের কাছে পাব, তাকেই মারব'।
প্ল্যাসকেটের বক্তব্য, ট্রাম্প এই সব করার জন্যই সমর্থকদের পাঠিয়েছিলেন। দাঙ্গাকারীরা পেলোসিকে বিশেষ করে খুঁজছিল। তাঁর অফিসে ঢুকে তারা ভাঙচুর করে। একজনের হাতে ছড়ির মতো অস্ত্র ছিল। হাউসের সদস্যরা যখন নিরাপদ জায়গায় যাচ্ছিলেন, তখনই দাঙ্গাকারীরা হাউসে ঢুকে পড়ে। মিনিটখানেক আগে তারা ঢুকতে পারলেই ভয়ঙ্কর অবস্থা হতো।
দাঙ্গায় তিনজন অফিসার মারা গেছিলেন। ১৪০ জন আহত হয়েছিলেন।
জিএইচ/এসজি(এপি, রয়টার্স)