অভিযুক্তরা নজরদারিতে
১৩ মে ২০১৪এদিকে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনায় র্যাবের তিন কর্মকর্তাকে আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী যে-কোনো সময় গ্রেফতার করা হবে৷
ঢাকায় এক সমাবেশে সোমবার বিকেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নারায়ণগঞ্জের ঘটনা উল্লেখ করে বলেন, ‘‘র্যাব ‘ভাড়াটে খুনি'৷ তারা টাকার বিনিময়ে খুন করছে৷ র্যাব মানুষের নিরাপত্তা দেওয়ার পরিবর্তে জীবন নিয়ে নিচ্ছে৷ এই বাহিনীর আর প্রয়োজন নেই৷ অবিলম্বে এই বাহিনীকে বিলুপ্ত করতে হবে৷'' তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াও বলেছেন র্যাবের আর প্রয়োজন নেই৷ তাঁর এই বক্তব্য ন্যায়সংগত৷ এটা এখন সময়ের দাবি৷
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, ‘‘উচ্চ আদালতের দেওয়া নির্দেশের পর এটা স্পষ্ট যে নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনায় র্যাব জড়িত৷ তবে কেবল র্যাবকে দায়ী করলেই হবে না, কেননা সরকার ও প্রধানমন্ত্রী এই বাহিনী পরিচালনায় ব্যর্থ হয়েছেন৷''
বিএনপি র্যাব সৃষ্টি করেছে, এখন তারাই র্যাবের বিলুপ্তি চাচ্ছে, এই সমালোচনার জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘র্যাব গঠন করা হয়েছিল জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস নির্মূলের জন্য৷ কিন্তু এখন এই বাহিনীকে সরকার বিরোধী দল দমনের কাজে ব্যবহার করছে৷ এই বাহিনী সাধারণ মানুষকে খুন করছে৷ র্যাব বিলুপ্ত করে জনগণের সেবার জন্য আলাদা বাহিনী গঠন করতে হবে৷''
অন্যদিকে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল জানিয়েছেন, ‘‘অবসরে পাঠানো র্যাবের তিন কর্মকর্তাকে গ্রেফতারে আইনি প্রক্রিয়া চলছে৷ তাঁরা নজরদারিতে আছেন, শিগগিরই গ্রেপ্তার হবেন৷'' রবিবার হাইকোর্ট নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনার পর অবসরে পাঠানো র্যাবের তিন কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করতে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আইজিপিকে নির্দেশ দেন৷
আদালত আদেশে বলেন, দণ্ডবিধি বা বিশেষ ক্ষমতা আইনে তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পাওয়া না গেলে তাঁদের ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করতে হবে৷ তিনজন র্যাব কর্মকর্তা হলেন র্যাব-১১'র সাবেক অধিনায়ক লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন ও নারায়ণগঞ্জ ক্যাম্পের প্রধান লে. কমান্ডার এম এম রানা৷ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা ৬ কোটি টাকা ঘুস নিয়ে নারায়ণগঞ্জের ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম এবং আইনজীবী চন্দন সরকারসহ ৭ জনকে অপহরণ ও হত্যা করে৷ গত ২৭ এপ্রিল অপহরণের পর তাদের লাশ ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদীতে ভেসে ওঠে৷
এদিকে নিহত নজরুলের শ্বশুর শহিদুল ইসলাম দাবি করেছেন, ‘‘অপহরণ ও হত্যার মূল আসামি নূর হোসেনকে র্যাব দেশের বাইরে পাঠিয়ে দিয়েছে ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে নিজেদের রক্ষার জন্য৷'' এই অভিযোগ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘‘এ বিষয়ে যাঁরা বক্তব্য দিয়েছে তাঁরা জানেন৷ আমরা তাঁকে (নূর হোসেনকে) গ্রেপ্তার করবই৷''