ঢাকা অচল
৫ এপ্রিল ২০১২ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের শিক্ষার্থীরা শাহবাগ এলাকার সড়ক অবরোধ করেন সকাল ৯টার দিকে৷ তারা অভিযোগ করেন, সাতক্ষীরা এলাকায় কয়েকটি সংখ্যালঘু পরিবারের ওপর নির্মম নির্যাতন চালান হয়েছে৷ কিন্তু প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নেয়নি৷ এমনকি কোন সংবাদ মাধ্যমও খবরটি গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেনি৷ তাই তারা বাধ্য হয়ে সড়ক অবরোধ করেন৷ প্রতিকারের আশ্বাস পেয়ে দুপুরে তারা অবরোধ প্রত্যাহার করেন৷
আর গুলশান এলাকার করাইল বস্তিতে রাজউক এবং ঢাকা জেলা প্রশাসন সকাল ১০টার দিকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করলে বস্তিবাসীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন৷ তারা এর প্রতিবাদে সকাল ১১টার দিকে মহাখালী এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন৷
কয়েক ঘণ্টা পর পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের আশ্বাসে বস্তিবাসীরা অবরোধ তুলে নেন৷ পুলিশ কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান জানান, হাজারখানেক বস্তিঘর আদালতের নির্দেশে উচ্ছেদ করা হয়েছে৷ নতুন করে আর উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবেনা৷
ঢাকার দুই প্রধান সড়ক এভাবে অবরোধ করায় দুপুর পর্যন্ত ঢাকা কার্যত নিশ্চল হয়ে পড়ে৷ শিক্ষার্থী, চাকুরিজীবী, ব্যবসায়ী কেউই ঠিক সময়ে তাদের গন্তব্যে পৌঁছতে পারেননি৷
নগর গবেষক অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে জানান, ঢাকার প্রায় ৫ হাজার বস্তিতে ৩৫ থেকে ৪০ লাখ মানুষ বসবাস করেন৷ তিনি জানান, বৃহস্পতিবার গুলশানের যে করাইল বস্তিতে উচ্ছেদ চালান হয়েছে, সেটি এখন ঢাকার সবচেয়ে বড় বস্তি৷ এই বস্তিতে এক লাখের বেশি মানুষ বসবাস করেন৷ বস্তিটি সরকারি জমিতে গড়ে উঠেছে৷ তাদের পুনর্বাসন বা বসবাসের বিকল্প ব্যবস্থা না করে উচ্ছে করা ঠিক নয়৷
ড. নজরুল ইসলাম বলেন, সমন্বিত নগর পরিকল্পনায় এইসব বস্তিবাসীদের পুনর্বাসনের কথা বলা আছে৷ হঠাৎ করে তাদের উচ্ছেদ করলে রাজধানীতে অস্থিরতা সৃষ্টি হবে৷ মনে রাখতে হবে, এই বস্তিবাসীরা নগরবাসীকে নানা ধরনের সেবাও দিচ্ছেন৷
প্রতিবেদন: হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন