1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অপরাধের কিনারা করবে আরএনএ

মার্টিন রিবে/এসবি১৭ নভেম্বর ২০১৪

অপরাধের রহস্য উন্মোচনে ইদানীং ডিএনএ পরীক্ষা কাজে লাগিয়ে অনেক সাফল্য পাওয়া যাচ্ছে৷ নতুন আরেকটি প্রক্রিয়া ‘জেনেটিক ফিঙ্গারপ্রিন্ট' শনাক্ত করার ক্ষেত্রে আরও বড় বিপ্লব আনতে পারে৷ জার্মানিতে চলছে এ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা৷

https://p.dw.com/p/1DoUz
Symbolbild Italien Präsident Napolitano Aussage Gericht
ছবি: Reuters/Alessandro Bianchi

খুনের ঘটনাস্থলে পুলিশ তদন্ত করছে৷ নিহত মানুষটির গায়ে বেশ কয়েকটি গুলি লেগেছিল৷ এখন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছেন৷ আঙুলের ছাপ ছাড়াও পুলিশ হত্যাকারীর ‘বায়োলজিকাল ক্লু' খুঁজছে৷ ডিএনএ বিশ্লেষণের মাধ্যমে অপরাধীর জেনেটিক আঙুলের ছাপ খুঁজে বিশেষজ্ঞরা অনেক কেসের সমাধান করেছেন৷ নতুন গবেষণা অনুযায়ী ডিএন-এর ‘ছোট ভাই' – অর্থাৎ মাইক্রো এরএনএ তদন্তের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সহায়ক হতে পারে৷

বন বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োলজিস্ট ও ফরেনসিক জেনেটিক বিশেষজ্ঞ ড. কর্নেলিউস কুয়র্টস তদন্তের কাজে মাইক্রো এরএনএ ব্যবহারের পদ্ধতি নিয়ে কাজ করছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘ডিএনএ দিয়ে মানুষ শনাক্ত করা যায়৷ যেমন মৃত মানুষের পরিচয় জানা যায়, কে অস্ত্র ছুঁয়েছে তা জানা যায়৷ কী ঘটেছিল, তা আরএনএ-র সাহায্যে জানা যায়৷ স্যাম্পেল বিচার করে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সঙ্গে তার সম্পর্ক নির্ধারণ করা যায়৷''

হিংসাত্মক অপরাধের রহস্য উন্মোচনের ক্ষেত্রে গোটা ঘটনা যতটা সম্ভব নিখুঁতভাবে সাজানো অত্যন্ত জরুরি৷ ঘটনাস্থলে পাওয়া ক্লু-গুলির বিস্তারিত মূল্যায়ন করতে হয়৷ যেমন একটি ছুরির উপর রক্তের দাগ নিয়ে দুই বিশেষজ্ঞ ব্যস্ত৷ কীভাবে তা থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বার করা যায়, সেটাই আসল চ্যালেঞ্জ৷

ছুরিতে লাগানো রক্তের দাগ থেকে যে মাইক্রো-আরএনএ ক্লু পাওয়া গেছে, তা বিশেষ কোনো প্রত্যঙ্গের দিকে ইঙ্গিত করছে৷ কিছুকাল আগে জানা গেছে, যে মানুষের শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলির আলাদা আলাদা মাইক্রো-আরএনএ অণু রয়েছে৷ ফলে সেগুলি নিখুঁতভাবে শনাক্ত করাও সম্ভব৷ ড. কুয়র্টস বলেন, ‘‘এই পদ্ধতি প্রয়োগের একটা দৃষ্টান্ত হলো, অপরাধের পর ছুরির মতো কোনো অস্ত্রে শরীরের টিস্যু বিশ্লেষণ করে জানতে পারা উচিত, সেটি শরীরে কত গভীরে প্রবেশ করেছিল৷ সেটি যদি শরীরের ভিতরে যকৃতের মতো কোনো অংশে আঘাত করে থাকে, তখন তাতে যকৃতের টিস্যু পাওয়া যাবে৷ তখন এই অপরাধের কিনারা করা অনেক সহজ হবে৷''

যৌন অপরাধের ক্ষেত্রেও মাইক্রো-আরএনএ বিশ্লেষণ প্রক্রিয়া বিশেষ সহায়ক হতে পারে৷ কারণ মাইক্রো-আরএনএ-র সাহায্যে রক্ত, থুতু বা বীর্যের মতো শরীরের তরল পদার্থ স্পষ্টভাবে আলাদা করা সম্ভব৷ ড. কুয়র্টস বলেন, ‘‘ঠিক কী ঘটেছে এবং সেটি যৌন অপরাধ কিনা, তা বিচার করতে গেলে জানতে হবে ঠিক কোথা থেকে ক্লু নেয়া হয়েছে – যৌনাঙ্গ নাকি শরীরের বাইরে থেকে? তাতে কি বীর্য পাওয়া গেছে? খালি চোখে তা বোঝা অসম্ভব৷ কিন্তু তাতে যদি সেই মাইক্রো-আরএনএ পাওয়া যায়, যা শুধু বীর্যের মধ্যেই থাকে, তখন ধারণা আরও বদ্ধমূল হয়ে যাবে৷''

স্যাম্পেল থেকে মাইক্রো আরএনএ আলাদা করতে গবেষকরা নানা রাসায়নিকের সাহায্যে সেটিকে প্রস্তুত করছেন৷ বিশেষ এক বিশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় তা থেকে মাইক্রো আরএনএ প্রোফাইল তৈরি করা হয়, যা কোনো স্যাম্পেলের গঠন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেয়৷ ড. কুয়র্টস বলেন, ‘‘প্রমাণিত আরএনএ-র সূচক হিসেবে এই খানে এক বাঁক দেখা যায়৷ এটি একমাত্র বীর্যের ক্ষেত্রে দেখা যায়৷ ফলে এক্ষেত্রে যে মিশ্রণ পাওয়া যাচ্ছে, তা যৌন অপরাধের দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করছে৷''

কয়েক মিটার দূর থেকে গুলি খেলে আক্রান্ত মানুষটির রক্ত ও টিস্যুর ক্ষুদ্র অংশ এবং সেই সঙ্গে তার মাইক্রো আরএনএ অস্ত্রের পথে ছড়িয়ে পড়ে৷ এমনকি দ্বিতীয় গুলি চালালেও প্রথমটির চিহ্ন নষ্ট হয় না৷ ক্ষুদ্র অথচ মজবুত মাইক্রো আরএনএ অক্ষত অবস্থায় তা সামলে নেয়৷ তখন এমনকি লাশ পাওয়া না গেলেও জানা যায়, মানুষটির মাথায় গুলি লেগেছিল কি না৷ ড. কুয়র্টস বলেন, ‘‘মাথায় গুলি লাগলে তার পেছনের অংশ থেকে মস্তিষ্কের টিস্যু বেরোবে৷ তখন আমরা এমন মাইক্রো আরএনএ খুঁজি, যা শুধু মস্তিষ্কের মধ্যেই থাকে৷ তেমন মাইক্রো আরএনএ পেয়ে গেলে আমরা নিশ্চিত হতে পারি যে গুলি মাথায় লেগেছিল৷''

অপরাধের রহস্য উন্মোচন করতে মাইক্রো আরএনএ এখনই কাজে লাগানো যেতে পারে৷ তবে জার্মানিতে পুলিশের কাজে তার নিয়মিত প্রয়োগের অনুমতি পেতে আরও কয়েক বছর সময় লাগবে৷ তার আগে অনেক পরীক্ষা সফলভাবে সম্পন্ন করতে হবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য