অন্ধ স্কি খেলোয়াড় ম্যাককিভারের অলিম্পিকে অংশ নেবার স্বপ্ন পূরণ
৩ ফেব্রুয়ারি ২০১০কিশোর বয়সেই তিনি দৃষ্টিশক্তি হারান৷ ছোটবেলার স্বপ্ন ছিল, তিনি অলিম্পিকে অংশ নেবেন৷ সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে৷ চলতি মাসে ভ্যানকুভার অলিম্পিকে তিনি অংশ নেবেন তাঁর দেশের প্রতিনিধি হয়ে৷
ম্যাককিভার হচ্ছেন প্রথম ক্রীড়াবিদ, যিনি একই সাথে শীতকালীন অলিম্পিক এবং প্যারালিম্পিকেও অংশ নেবেন৷ আর তিনি চান সব সক্ষম এবং প্রতিবন্ধী মানুষের অনুপ্রেরণার উৎস হতে৷ তিনি মনে করেন, তাঁকে দেখে অনেকেই উৎসাহিত হবেন৷ কারণ তাঁরা ভাববেন একজন অন্ধ যদি পারে তাহলে তাঁরাও পারবেন৷ তখন অনেকেই খেলতে আগ্রহী হবেন৷
একজন স্বাভাবিক মানুষ যা দেখতে পায় তার মাত্র দশ শতাংশ দেখতে পান ম্যাককিভার৷ আর এই অসুখের নাম ‘স্টারগার্ট'৷ কিন্তু এ অবস্থাতেও হার মেনে নেন নি তিনি৷ স্বপ্ন পূরণের উদ্দেশ্যে করেছেন অক্লান্ত পরিশ্রম৷ নিজ অক্ষমতাকে দমন করে তিনি স্থান করে নিয়েছেন ভ্যানকুভার অলিম্পিকে অংশগ্রহণকারী কানাডার দলটিতে৷ আর এর জন্য তাঁকে জয়ী হতে হয়েছে জানুয়ারি মাসে ক্যানমোর-এ অনুষ্ঠিত সক্ষম ব্যক্তিদের ৫০ কিলোমিটারের প্রতিযোগিতাটিতে৷ মার্চ মাসে প্যারালিম্পিকে অংশ নিতে তিনি ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় ফিরবেন৷
তিনি কী দেখতে পান, আর কী দেখতে পান না – ম্যাককিভারের কাছে তা জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, তাঁর দৃষ্টি অনেকটা ফ্ল্যাশ টিউবের মত৷ তিনি সমান্তরাল দৃশ্য আঁচ করতে পারেন, তবে রঙ, মানুষের মুখ বা এই জাতীয় বিষয় শনাক্ত করতে পারেন না৷
অল রাউন্ডার ডেভন কারশও ম্যাককিভারের সর্ম্পকে বলেন, তাঁকে দেখে কখনই মনে হবে না, যাঁরা স্বাভাবিক তাঁদের তুলনায় মাত্র দশ শতাংশ তিনি দেখতে পান৷ প্রতি বিকেলে তাঁকে দেখা যাবে কিছু পড়ার চেষ্টা করছেন৷ তাঁর অবস্থায় থেকে এটি এক বড় সংগ্রাম৷ তিনি সবার প্রেরণার উৎস৷
এবারের প্রতিযোগিতায় বড় ভাই রবিন – যিনি ম্যাককিভারের গাইডের দায়িত্ব পালন করেন, তিনি সঙ্গে নেই৷ রবিনের অনুপস্থিতিকে মেনে নিয়ে তিনি বলেন, রবিন না থাকলেও অনেক মানুষ রয়েছে, যাদের আমি অনুসরণ করতে পারব৷ তবে শুধু মনে রাখতে হবে, প্রতিযোগিতায় তাঁকে একাই লড়াই করতে হবে – সাহায্য করার জন্য সঙ্গে কেউ থাকবে না৷
প্রতিবেদন: আসফারা হক, সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন